সংস্কারটা কোথায় হচ্ছে, জনজীবনে তার কোনো প্রতিফলন নেই: আনু মুহাম্মদ

প্রকাশিত: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

অন্তর্র্বতী সরকার সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, সংস্কারটা কোথায় হচ্ছে, এটাই তো আমরা বুঝতে পারছি না। সংস্কার হতে গেলে তার তো একটা প্রতিফলন জনগণের জীবনের মধ্যে থাকবে। জনগণের জীবনে তার কোনো প্রতিফলন নেই।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বন্ধ কারখানা চালু, বকেয়া মজুরি পরিশোধ, শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং মিথ্যা মামলায় শ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জিনিসপত্রের দামের মধ্যে সংস্কারের প্রতিফলন নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে এর প্রতিফলন নেই। বিভিন্ন জায়গায় যে দমন–পীড়ন ও অনিশ্চয়তা, সেটার মধ্যে সংস্কারের কোনো প্রতিফলন নেই। সংস্কারের প্রতিফলন আনতে হলে সাম্রাজ্যবাদের ওপর নির্ভরশীলতার জায়গা থেকে বের হতে হবে।

তিনি বলেন, আইএমএফের সঙ্গে চুক্তির কারণে কিছুদিন আগে সরকার জনগণের ওপর ভ্যাট বসিয়েছে। এতে জিনিসের দাম বেড়েছে। সরকারের লোকজন বলছেন, তাদের টাকাপয়সার অভাব। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ না নিলে হচ্ছে না।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য থাকে একটি দেশের যত সম্পদ, তা কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর হাতে ছেড়ে দেওয়া। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের আমলে যে লুটেরা ধনিকশ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ হয়েছিল, তার পেছনে এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো প্রবলভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। অন্তর্র্বতী সরকার আসার পর পরিবর্তন হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোনো ধরনের পার্থক্য নেই।

বকেয়া মজুরির জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে এই সরকারের সময়ও গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিক মারা গেছেন উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, বিষয়টি অবিশ্বাস্য। শ্রমিকদের রাজনৈতিক শক্তি তৈরি না হলে অন্তর্র্বতী সরকার মুখে যতই বড় বড় কথা বলুক, শ্রমিকদের পক্ষে কোনো ধরনের পদক্ষেপ তারা নেবে না। এ সময় শিল্প পুলিশ বাতিলের দাবিও জানান তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান মানুষের টাকা লুট করে যেসব কারখানা করেছেন, সেগুলোর ওপর বাংলাদেশের মানুষের সম্পূর্ণ অধিকার আছে বলে মনে করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, এসব কারখানা চালু রাখা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু সরকার বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে কারখানা বন্ধ করায় প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছেন।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মাহতাব উদ্দীন আহমেদের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, শ্রমিকনেতা আ ক ম জহিরুল ইসলাম, হারুন-অর-রশিদ ভূঁইয়া, মাসুম বিল্লাহ, সত্যজিৎ বিশ্বাস প্রমুখ।