নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, আসন্ন ঈদযাত্রায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। আজ সোমবার (১৯ জুন) বিকেলে পুলিশ সদরদপ্তরের হল অব প্রাইডে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা, সড়ক, রেলপথ ও নৌপথের নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা পরিকল্পনা, গার্মেন্টস ও শিল্প-কারখানা সংক্রান্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ইত্যাদি বিষয় উপস্থাপন করেন।
এসময় আইজিপি বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোরবানির পশুবাহী গাড়ি থামানো যাবে না। সড়ক অথবা নৌপথে কোরবানির পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে পশুবাহী গাড়ির সামনে গন্তব্যস্থান/পশুর হাটের নাম উল্লেখ করে ব্যানার টাঙানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি। কোরবানির পশু পরিবহনে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে নিকটস্থ থানা অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করার অনুরোধ করেন পুলিশ প্রধান। এসময় তিনি জালটাকা প্রতিরোধে পশুর হাটে জালটাকা শনাক্তকরণ মেশিন বসানোর নির্দেশ দেন। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য হাইওয়ে পুলিশ এবং জেলা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
মালিক- শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, গাড়িচালক গাড়ি না চালিয়ে হেলপারকে চালাতে দেন। এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এ বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য তিনি মালিক-শ্রমিকদের অনুরোধ করেন। পণ্যবাহী গাড়িতে বা ট্রাকে ভ্রমণ না করতে সবার প্রতি আহবান জানান। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন আইজিপি।
দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাত কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকে বিনোদনকেন্দ্রে বেড়াতে যাবেন। তিনি বিনোদনকেন্দ্রের নিরাপত্তা গ্রহণেরও নির্দেশ প্রদান করেন। আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, গত ঈদুল ফিতরে আমরা সবাই মিলে একই প্ল্যাটফর্মে একযোগে কাজ করে জনগণকে একটি স্বস্তিদায়ক ঈদ উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি। ফলে আমাদের সম্পর্কে জনমনে একটা আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায়ও একটি সুন্দর ঈদ উপহার দিতে সক্ষম হবো।

সভায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতরা অতীতের ন্যায় আগামী ঈদেও যানবাহন চলাচলে পুলিশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, এটিইউয়ের অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাজহারুল ইসলাম, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম, পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খাঁন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাহাবুবর রহমান, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বাংলাদেশ পুলিশের সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপাররা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ জাহাজ মালিক সমিতি ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহম্মেদ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন, ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন যানবাহন ইউনিয়ন, ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।