জেলা প্রতিনিধি,সিরাজগঞ্জঃ
ঈদ যাত্রায় উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ১৬ জেলার যানবাহন চলাচল করে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক দিয়ে। ঈদে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলে বাড়তি চাপ বাড়ে এই সংযোগ মহাসড়কে। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত চার লেনের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর খুলে দেওয়া হয়েছে।
বগুড়ার মির্জাপুর পর্যন্ত চার লেনের কাজ শেষের দিকে, যা ঈদের আগেই সমাপ্ত হবে বলে জানায় সড়ক বিভাগ। এতে ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের ভোগান্তি কমে আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা পর্যন্ত ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত ছিল। ইতিমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোসহ মহাসড়কের কাজ দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে। সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা দিন-রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা বলেছেন, এবার নিরাপদ ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে মহাসড়কে।
জানা যায়, ঈদ যাত্রায় সড়কপথে উত্তবঙ্গের প্রায় ১৬ জেলার মানুষ রাজধানী ঢাকা ছাড়তে ব্যবহার করেন এই সড়কপথ। স্বাভাবিক সময়ে দিনে ২০-২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হতো যানজট। যাত্রীদের পোহাতে হতো দুর্ভোগ ও ভোগান্তি। এছাড়াও মহাসড়কে রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সংস্কারকাজ সমাপ্ত করায় এই ভোগান্তি এখন আর হবে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাসেক্স-২ প্রকল্পের অধীনে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একাধিক ব্রিজ, কালভার্ট, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছর এই মহাসড়কের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নলকা সেতু, ফ্লাইওভার, কড্ডা ফ্লাইওভার ইতিমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে গাড়ি চলাচলে গতি এসেছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে আগের মতো আর যানজটের সৃষ্টি হয় না।
সাসেক্স-২ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে, এজন্য হাটিকুমরুল মোড়ে এক মাস আগেই কংক্রিটের রাস্তা মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ওয়াদুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত প্রায় ছোট বড় ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ছিল। সাসেক্স-২ এর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে প্রায় সব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সংস্কার করায় এই সড়ক এখন ঝুঁকিমুক্ত। এবারের ঈদযাত্রায় কোনো মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না বলে জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) আবু জাফর বলেন, ‘আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে মহাসড়কে যানজটমুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। মহাসড়কে আমাদের ১৫-১৮টি মোবাইল টিম থাকবে।’ সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মণ্ডল বলেন, ‘এ বছর মহাসড়কের অবস্থা খুবই ভালো। ঈদযাত্রায় মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৭৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকবে।’ সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিম থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।