সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত চুয়াডাঙ্গার জনজীবন

প্রকাশিত: ১২:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। হিম বাতাসে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ আর ছিন্নমূল মানুষ। পাড়া-মহল্লায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের করছেন অনেকে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। এ ছাড়া একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে। এর আগে গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। জেলার সকল মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সোমবার রাত থেকেই মৃদু বাতাস বইছে। আজ সকাল থেকে রোদের দেখা মিললেও তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ।

তীব্র শীতের কারণে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভিড় করছে। গত তিন দিনে শিশুসহ প্রায় ২ হাজার রোগী ঠান্ডাজনিত কারণে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আতাউর রহমান।

অপরদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।চুয়াডাঙ্গা শহরের আনিছুর রহমান নামের এক রিকশাচালক  বলেন, তীব্র শীত আর বাতাসের কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সকাল থেকে রাস্তায় তেমন কোনো যাত্রী নেই। ঠান্ডায় হাত-পা যেন বরফ হয়ে যাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজারে কাজের সন্ধানে আসা দিনমজুররা জানান, তীব্র শীতে অনেকেই কাজে আসেনি। যারা এসেছেন তারাও দেরিতে এসেছেন। কনকনে শীত সঙ্গে বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে।কৃষকরা জানান, ভোর থেকেই কৃষি জমিতে কাজ করছেন। অতিরিক্ত ঠান্ডায় হাত চলছে না। সঙ্গে বাতাস শরীর কাঁপিয়ে দিচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তবিবুর রহমান  বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আজ জেলার সকল মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান  জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের ও চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে।

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. কিসিঞ্জার চাকমা  বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এখনো দু-একটা উপজেলায় কার্যক্রম চলছে। গত নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ২৮ হাজারের মতো কম্বল পেয়েছি। আরও কম্বলের চাহিদা চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।