ডেস্ক রিপোর্টঃ
আগে বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট—এই দুই সংস্করণে। তবে গেল এশিয়া কাপের আগে হুট করে ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে তামিম ইকবাল দায়িত্ব ছেড়ে দিলে এই ফরম্যাটেও নেতৃত্বের ভার ওঠে তার কাঁধে। এরপর তার নেতৃত্বেই টাইগাররা এশিয়া কাপ ও ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছেন। যদিও বিশ্বকাপে আগে সাকিব একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, ওয়ানডে ফরম্যাটের দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দেবেন। তবে এই বিষয়ে আসর শেষে আর কোনো আলোচনা হয়নি। ফলে তিনি এখন দেশের ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে রয়েছেন। যদিও বিশ্বকাপ আসরে নিজেদের অষ্টম খেলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে হাতে চোট পাওয়ার পর থেকে এখনো দলের বাইরে তিনি। তার পরিবর্তে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সম্প্রতি ঘরের মাটিতে শেষ হওয়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দেশের ১৩তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এবার নিউজিল্যান্ডের ঘরের মাটিতেও তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি সিরিজের অধিনায়কের ভার শান্তকেই দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো তাকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের পরিকল্পনায় এখন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানই রয়েছেন। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটি জানিয়েছেন ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘এখানে আসলে (অধিনায়কত্ব নিয়ে) নতুন করে ভাবনার কিছু আসে না। সাকিব এখনো আমাদের অধিনায়ক। এখন আমরা শান্তকে দায়িত্ব দিয়েছি। শান্তকে আমরা বলেছি যে, সামনের দুইটা সিরিজ আছে, যেটা নিউজিল্যান্ড সিরিজ, সেজন্য তাকে অধিনায়কত্ব দিয়েছি। সাকিবকে একটা লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনো সে সব সংস্করণের অধিনায়ক। সাকিব ফিরলে আমরা ধরে নিচ্ছি সে-ই অধিনায়ক। এখন সামনে সে অধিনায়ক থাকবে কী থাকবে না, এরকম কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। সে জানে সে এখনো অধিনায়ক। আমরাও তাকে চাই। এরই মধ্যে তাকে সেই দায়িত্ব দিয়ে রেখেছি।’ বিশ্বকাপেও সাকিবের অনুপস্থিতিতে দুই ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত। এরপর সিলেট ও মিরপুর টেস্টে নিউল্যান্ডের বিপক্ষে নেতৃত্ব দিয়ে কুড়িয়েছেন প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। এছাড়া শান্তর পাশাপাশি দলের নেতা হওয়ার বিবেচনায় রয়েছেন দলের আরেক অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজও। তবে বিসিবির মতে যতদিন সাকিব দলে রয়েছেন ততদিন তার সান্নিধ্যে থেকে শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ নেতৃত্বে আরো দক্ষ হবেন। এ বিষয়ে ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটা সময় তো আসবে সাকিব অবশ্যই আর খেলা চালিয়ে যাবে না। হয়তো কোনো ফরম্যাট কমিয়ে দেবে। আমাদের হাতে শান্ত আছে, মিরাজ আছে; আমরা যাদের সম্ভাবনাময় অধিনায়ক বলি। এটা বোর্ডের কাছে মনে হয় তারা বাংলাদেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া মতো তাদের দুজনেরই সামর্থ্য আছে।’ এদিকে চোট না সারায় দলের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তাই তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। সেখানে গত পরশু একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন আইপিএল এবং পিএসএল থেকে নিজের নাম সরিয়ে নিয়েছে, কারণ জাতীয় দলে পুরো মনোযোগ দিতে চান। সাকিব বলেছিলেন, ‘আইপিএলে নামই দেইনি। স্বাভাবিকভাবে এটা একটা সময় ফাঁকা থাকবে আমার। পিএসএলে আমার ম্যানেজার যখন নাম দিয়েছিল, তখন আমি বলেছি নামটা সরিয়ে নিতে। পিএসএলেও আমার নাম নেই। আমার মূলত পরিকল্পনা থাকবে পুরো সময়টা যেন জাতীয় দলে দিতে পারি। আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি যে টুর্নামেন্টগুলোতে খেলতাম, হয়তো এগুলো এখন আমি স্যাক্রিফাইস করব।’ সাকিবের এমন পরিকল্পনায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য স্বস্তির বলে মনে করছেন জালাল ইউনুস। বলেন, ‘ওর (সাকিব) কথা মিডিয়াতে দেখেছি। এটা আনন্দের ব্যাপার। সে এখন দেশের ক্রিকেট নিয়ে বেশি মনোযোগী হবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে। এটা আমাদের জন্য বড় একটা স্বস্তির খবর। আমরা চাই, যতগুলো সংস্করণ আছে, সে যেন আমাদের দেশের জন্য খেলুক। এটা আমাদের কামনা।’