ডেস্ক রিপোর্ট:
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেটের মূল হোতা হিসেবে পরিচিত দু’জনকে আটক করে প্রত্যর্পণে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ অক্টোবর ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা থেকে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, আমিনুল ইসলাম ও রুহুল আমিন নামে ওই দুই ব্যবসায়ী ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আদায় করে তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা দু’জন এ ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন।
প্রায় ছয় বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের আগস্টে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ শুরু করে মালয়েশিয়া। গত ৩১ মে পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার কর্মী দেশটিতে যায়। এর পর বন্ধ করে দেওয়া হয় নিয়োগ। ফলে অনুমতি পেয়েও প্রায় ১৭ হাজার কর্মী যেতে পারেননি।
মালয়েশিয়া সরকার ২০২২ সালের জুনে ২৫ বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর কাজ দেয়। এসব এজেন্সি সিন্ডিকেট নামে পরিচিতি পায়। এতে চার বাংলাদেশি মন্ত্রী ও এমপির প্রতিষ্ঠান ছিল। সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয় নাগরিক আমিনুল ইসলাম আবদুন নুর। বাংলাদেশ অংশের নিয়ন্ত্রণ করতেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী রুহুল আমিন স্বপন।
বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেক কর্মীর অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করেছিল ৭৯ হাজার টাকা। কিন্তু প্রত্যেক কর্মীর কাছ থেকে ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা নেওয়া হয়। সিন্ডিকেটের বাংলাদেশ অংশের নিয়ন্ত্রকরা ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা করে নেন। মালয়েশিয়ার নিয়ন্ত্রকরা ভিসাপ্রতি ছয় হাজার রিঙ্গিতের সমপরিমাণ প্রায় দেড় লাখ টাকা নেয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়েছেন রুহুল আমিন স্বপন।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখার পুলিশ পরিদর্শক আশিকুর রহমান গত রোববার টেলিফোন সাক্ষাৎকারে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ মালয়েশিয়া সরকারকে আমিনুলের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি বেস্টিনেট সফটওয়্যারের ব্যবহার সাময়িক বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছে। পুলিশ পরিদর্শক আশিকুর রহমান জানান, ওই দু’জনকে সবশেষ কুয়ালালামপুরে দেখা গেছে।