সিয়াম আহমেদ পাখিকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসি, ব্যথায় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি

বিনোদন ডেস্ক :
ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জংলি’ সিনেমা দর্শকমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। এম রাহিমের পরিচালনায় এই সিনেমায় উঠে এসেছে বাবা-মেয়ের গল্প, যা প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের চোখে কান্না ঝরিয়েছে।
পর্দায় জনি থেকে জংলি হয়ে ওঠা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। সিনেমার প্রথমার্ধে সিয়ামকে সেই চিরায়ত ‘চকলেট বয়’ লুকে দেখা গেলেও পরে তার লুক ও অভিনয় ছিল আগের কাজগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা। পর্দায় এবার তিনি পাশের বাড়ির ছেলে নন; বরং বখে যাওয়া এক জংলি। পর্দায় তিনি সত্যিই জংলি হয়ে উঠেছিলেন।
সিয়ামের সঙ্গে সিনেমায় পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন ছোট্ট নৈঋতা। পাখি নামের ছোট্ট মেয়ের চরিত্রে সে ছিল সাবলীল। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খাবার কুড়িয়ে খাওয়া, জংলির ঘরে গিয়ে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসা। অত:পর সিয়াম সত্যিই সত্যিই তার বাবা হয়ে উঠেন।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জংলি’ সিনেমা টেনে নিয়ে গেছে শিশুশিল্পী নৈঋতাই। সিনেমাটির অক্সিজেনও ছিল সে- এমনও মন্তব্য আসে অনেকের কাছ থেকে। এমনকি প্রিয়তমা নির্মাতা হিমেল আশরাফের কণ্ঠেও শোনা গেছে ‘পাখি’ চরিত্রে নৈঋতার অভিনয়ের প্রশংসা।
জানা গেছে, বাবা-মায়ে একমাত্র মেয়ে নৈঋতা। বর্তমানে থাকছে যুক্তরাজ্যে। ক্লাস ফোরে পড়ুয়া এই কিশোরী প্রথমবারের মতো কোনো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। আর প্রথম কাজেই বাজিমাত করেছেন।
নৈঋতার প্রশংসায় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চার মাস সময় নিয়ে এই চরিত্রটা খুঁজে বের করতে হয়েছে। নৈঋতার মাঝে গড গিফটেড ব্যাপার রয়েছে। জংলি সিনেমায় অসংখ্য দৃশ্যে একফ্রেমে দেখা মিলেছে সিয়াম-নৈঋতার। তবে শুটিংয়ের একটি দৃশ্যে অভিনেতার মনে বেশি গেঁথে আছে। যেখানে অভিনয়ের সময় ব্যাথ্যা পেয়ে কান্না করেছে ছোট্ট সেই কিশোরী।
সেই ঘটনা উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিয়াম বলেন, একটি দৃশ্য ছিল, পাখিকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসি। এটা আমার জন্য অনেক টাচি একটা ব্যাপার ছিল। কারণ একজন শিশুকে এভাবে টেনে নিয়ে আসাটা কঠিন কাজ। আবার দৃশ্যটি মেকি নয় বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হবে। সেভাবে শুটিং করতে গিয়ে শিশুটি পড়ে যায়। তারপরও তাকে টেনেহিঁচড়েই নিয়ে আসি। এতে পাখি হাতে ও পায়ে ব্যথা পায়। কিছু জায়গায় চামড়াও উঠে যায়।
পরের ঘটনা উল্লেখ করে অভিনেতা বলেন, প্রচণ্ড ব্যথায় পাখি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, সে আর শুটিং করবে না। সে পরিচালকসহ টিমের কারও কথাই শুনবে না। পরে এ কথাগুলো শুনলাম। সবশেষে আমি তাকে পাঁচ মিনিট কোলে নিয়ে বসে ছিলাম। পুরো সময় পাখি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। পরে সে নিজেই বলেছে, ‘চলো, শুটিং করি।’ আমিও তাকে বলি আমার ভুল হয়েছে, তুমি ব্যথা পাও সেভাবে আর শুটিং করব না। এই বোঝাপড়া পরে সিনেমার প্রাণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
নৈঋতার কণ্ঠেও শোনা গেছে সেই ঘটনার অভিজ্ঞতা। তার কথায়, ‘শুটিংয়ে একদিন আমার হাতে আঘাত লাগে। এরপর আমার পায়ের নখ ভেঙে যায়। অনেকদিন রাত জেগে শুট করতে হয়েছে। তখন ছিল প্রচণ্ড গরম। ইউনিটের বাকি সবাই আমার খুবই টেক কেয়ার করেছে। তাই কষ্ট হলেও অভিনয় করে ভালো লেগেছে।’
ঈদে মুক্তি পাওয়া সিয়াম আহমেদের এই ছবিতে তার বিপরীতে আছেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী ও দীঘি। আরও আছেন দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম এবং রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ।