সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট

প্রকাশিত: ৩:০৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

সিলেট ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে কার্গো ফ্লাইট। ফলে পূরণ হতে চলেছে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ দিনের দাবি। এতে কমে আসবে ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহণ খরচ ও সময়।

জানা যায়, সাধারণত আকাশপথে কার্গো পরিবহনে ব্যবসায়ীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্য ঢাকায় নিয়ে আসতে হতো। এমনকি চট্টগ্রাম বা সিলেট অঞ্চলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থাকার পরও ব্যবসায়ীরা আকাশপথে পণ্য পরিবহনে ঢাকার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। তবে সেই নির্ভরতা এবার দূর হতে চলেছে। সিলেট ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো শুরু হলে সুফল পাবেন দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।

বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (বেবিচক) কর্মকর্তারা জানান, দ্রুত পণ্য রপ্তানির সুবিধার কথা চিন্তা করে ঢাকার হযরত শাহজালালের পাশাপাশি চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইটের উদ্যোগ নেওয়া হয়। চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এ সেবা শুরু করা হবে। সেবা প্রদানে বিমানবন্দর দুটি সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

বেবিচক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ক্যাটাগরি ১ এ উন্নীত হয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের (আইকাও) একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে এ ঘোষণা দেন। বিমানবন্দরে কার্গো ফ্লাইটে পণ্য তোলা–নামা ও তল্লাশির ক্ষেত্রে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ দুটি বিমানবন্দর দিয়ে ফ্লাইট চালু হলে পণ্য সরাসরি ইউরোপে যাবে। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি কমবে, সেই সঙ্গে বাড়তি অর্থ খরচের হাত থেকেও রক্ষা পাবে। পাশাপাশি দ্রুত পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইট পরিচালনায় বেবিচকের প্রস্তুতির বিষয়টি ভালো উদ্যোগ (ইতিবাচক) হিসেবে দেখছে কার্গো ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একটি সভা করেন। সভায় কার্গো রপ্তানির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়।

এ ব্যাপারে খাতুনগঞ্জের ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগির আহমদ সমকালকে জানান, সিলেটের সঙ্গে চট্টগ্রামের বেশ কিছু পণ্যের আদান প্রদান হয়। খাতুনগঞ্জে সিলেটের অনেক পণ্য আসে। এখন যদি সরাসরি ফ্লাইট চালু হয় তা হলে এখানকার ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দু’টি বিভাগেরই অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে ব্যবসায়ীদের।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশন সাব কমিটির চেয়ারম্যান হিজকিল গুলজার সমকালকে বলেন, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইটে সরাসরি পণ্য পরিবহন বিষয়ে দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের সেই দাবি এখন পূরণ হতে চলছে। এ দু’টি বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইটে পণ্য পরিবহন হলে নানা ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবেন ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, শাহজালালে পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়ায় দেশে ৮টি কার্গো এয়ারলাইন্সের কার্যক্রম থাকলেও রপ্তানিকারকরা কার্গোর বড় একটি অংশ সড়ক পথে পার্শ্ববর্তী দেশের বিমানবন্দরগুলোয় পাঠান প্রসেসিং ও শিপমেন্টের জন্য। অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে কার্গো রপ্তানি ফিও বেশি। এসময় তারা ফি কমানোরও দাবি জানান।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, দ্রুত কার্গো পণ্য রপ্তানিতে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরইমধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা ও পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বিষয়ক সব কিছুই প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, আশা করছি চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে শুরু করা হবে কার্গো ফ্লাইট।