জেলা প্রতিনিধি, নাটোর
‘সেই ঠান্ডা, বৌমার চাদর জড়ায় আইছি কম্বল লিতে। ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে আইসে একটা কম্বল পানু, আমার যে কতো উপকার হইল বাবা, আল্লাহ যেন তারেক সুখে রাখে।’
এভাবেই বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব বয়সী মজিরুন বেগম। সিংড়ার চলনবিল ও হালতিবিল এলাকার মাঝামাঝি এলাকা বাড়িয়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিংড়া উপজেলার ত্রিমোহনী ডাঙ্গাপাড়া বাজারে একটি সামাজিক সংগঠন গরিব অসহায়-হতদরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করে। সেখানে কম্বল নিতে এসে এসব কথা বলেন ওই নারীএদিন মজিরুন বেগমের মতো এমন দুইশত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করে ত্রিমোহনী একতা সবুজ সোসাইটি নামে স্থানীয় একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সেখানে কথা হয় পঞ্চাশোর্ধ নারী মরিয়ম বেগমের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুব শীত পড়ছে এই বছর। এই শীতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সরকারি কোনো কিছু এখনো পাইনি। আজ এদের (ত্রিমোহনী একতা সবুজ সোসাইটি) কম্বল পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। আমার মতো অনেকেই পেয়েছে এই কম্বল।
ত্রিমোহনী একতা সবুজ সোসাইটির উপদেষ্টা সদস্য সাইফুল বারী বলেন, চলনবিল-হালতিবিলের মাঝামাঝি এই এলাকায় বছরে ১ বার ফসল চাষ হয়। যার কারণে এখানকার মানুষ কিছুটা পিছিয়ে আছে। এই এলাকায় হতদরিদ্র-অসহায় মানুষের সংখ্যাও বেশি। অসহায়-হতদরিদ্র এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা এই সংগঠনটি গড়ে তুলেছি। বিভিন্ন উৎসবসহ দুর্যোগের মুহূর্তে আমরা এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, তীব্র এই শীতে গরীব-অসহায় মানুষের অনেক কষ্ট হয়। তাই এই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রকৃত ভুক্তভোগীদের তালিকা করে আজ প্রায় ২০০ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করলাম। শীতের এই মৌসুমে ধারাবাহিকভাবে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
সংগঠনটির এমন মানবিক কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়ে স্থানীয় মাদ্রাসার একজন সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, তীব্র এই শীতে সাধারণ অসহায় দরিদ্র মানুষের খুব কষ্ট হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই এলাকায় সরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, শীত চলে গেলে এসব কম্বল দিয়ে কি হবে। সরকারি কম্বল অতিদ্রুত সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণের আহ্বান জানান তিনি।