যশোর প্রতিনিধি:
যশোরে সোনা চোরাচালান মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই মামলায় আদালত দুই ভারতীয় নাগরিককে যাবজ্জীবন এবং মামলার অপর চার আসামিকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। রায় প্রদানকালে দণ্ডিতদের মধ্যে ছয় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান রায়ের বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মহিউদ্দিন তরফদার শান্তি, জাহিদুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমান। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন ভারতীয় নাগরিক মাসুদ রানা ও শফিকুল মন্ডল।
এ ছাড়া ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্তরা হলেন সাফি, ইমরান হোসেন, কবির হোসেন ও রুবেল হোসেন। আদালতের এই রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের স্বজনরা।
এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম শান্তি।
মামলার বিবরণে লেখা আছে, ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাতে শার্শার শিকারপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্য হাবিলদার মুকুল হোসেন নিয়মিত টহলের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন একদল চোরাকারবারি সোনা নিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে যাবে। এরপর তারা নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের সীমান্ত পিলারের পাশে অবস্থান নেন। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক নারিকেলবাড়িয়া মাঠের মধ্য দিয়ে ভারতের দিকে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করে বিজিবি। এ সময় মহিউদ্দিন নামের একজনকে আটক হন এবং দুজন ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যান।
মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ২২৪ পিস সোনার বার ও ফেলে যাওয়া দুটি ব্যাগ থেকে ৪০০ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে ৪০০ গ্রাম। পরদিন শিকারপুর বিওপির বিজিবির হাবিলদার মুকুল হোসেন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। এ মামলার তদন্তকালে আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যশোর অঞ্চলের এযাবৎ সবচেয়ে বড় সোনা চালানের মামলায় দৃষ্টান্তমূলক রায় হয়েছে। এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।’