হত্যা মামলা থাকার পরও দুর্নীতিবাজ অনেক ব্যবসায়ী এখনো মুক্ত: মির্জা আব্বাস

প্রকাশিত: ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২৫

নিজেস্ব প্রতিবেদক:

 

শেখ হাসিনার আমলে গড়ে ওঠা ‘ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট’ এর বিরুদ্ধে কেন গণমাধ্যম লিখছে না—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে গুলশানের হোটেল লেক শোরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের উদ্যোগে গণমাধ্যমকর্মীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একটি বিশেষ দল সম্পর্কে আপনারা কোনো সাংবাদিক কোনো কিছুই লিখছেন না, পর্দা অন্তরালে আরও অনেক কিছু আছে, ঘটছে, আপনারা কিন্তু লিখছেন না। শুধু লিখছেন বিএনপি সম্পর্কে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে, বাড়িয়ে লিখছেন।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা লিখছেন না কোন কোন ব্যবসায়ী হেলিকপ্টারে বেড়াতে যায়, কোন ব্যবসায়ী কাকে কত টাকা দেয়, কোন ব্যবসায়ী আজকে আমাদের অনেক রাজনৈতিক দলকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেৃযাদের নামে হত্যা মামলা থাকার পরও…একটি-দুটি নয়…এই ঘটনার পরেও অনেক ঘটনা রয়ে গেছে।’

‘আমি আপনাদের (সাংবাদিকদের) সমালোচনা করছি না। আমি আপনাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই যে, আপনারা কোথায় কোখায় ভুল করছেন,’ যোগ করেন তিনি।

এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এতে দেশের ক্ষতি হচ্ছে, জাতির ক্ষতি হচ্ছে। আপনারা (গণমাধ্যম) কেন তুলে ধরছেন না—জুলাইয়ের প্রথম দিকে ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে কারা কারা ছিল, কারা কারা গ্রেপ্তার হয়েছে, কারা হয়নি। কেন হয়নি এটা কিন্তু আপনাদের তুলে ধরা দরকার। এসব লোকগুলো গত ১৭ বছর টাকা কামিয়েছে, আর আগামী ১৭ বছর এই টাকা খরচা করবে বাংলাদেশ ধ্বংস করার পেছনে।’

‘সুতরাং আপনারা দয়া করে ওই সমস্ত ব্যক্তিদের একটু তুলে ধরেনৃসাবধান করেন। ওরা মনে করে, টাকা হলে বোধ হয় পৃথিবীটা পকেটে নেওয়া যায়। কিন্তু ওরা জানে না, টাকা হলে সব সাংবাদিকদের কেনা যায় না,’ বলেন তিনি।

ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানোর কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বিরুদ্ধে বলিনি, আমি আমার পক্ষে বলেছি। কারণ আমি বাঁচতে চাই, আমাকে বাঁচতে হবে। আর ওই লোকগুলো যদি অবৈধ টাকা নিয়ে এভাবে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে বাংলাদেশের কোনো মানুষ সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে পারবে না। এ দেশটাকে তারা অসুস্থ করে তুলবে, এ দেশের মানুষকে তারা অসুস্থ করে ফেলবে, এ দেশের গণতন্ত্রকে তারা অসুস্থ করে ফেলবে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শুধু অবৈধ টাকা লুটকারী ব্যবসায়ী না, সচিবালয়ে খোঁজ নেন, আওয়ামী দোসরা কীভাবে সেখানে সব কিছু নিয়ে বসে আছে, থানা, ইউনিয়ন পরিষদ সমস্ত জায়গায় তারা অবস্থান নিয়েছে।’

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ-পরিক্রমায় সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা আজকে কে কোথায় অবস্থান করছে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন কোন রাজনৈতিক দলের কার কী অবস্থান, কোথায় অবস্থান এটা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে হবে।’

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান ও সেলিমা রহমানও বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বিএনপি নেতা শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মওদদু হোসেন আলমগীর পাভেল, শাম্মী আখতার, আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম, মোস্তফা ই জামান সেলিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন।