হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি পাবে না গাজা: ইসরায়েল
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ডেস্ক রিপোর্ট:
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ করবে না গাজা উপত্যকা। কোনও কিছুতেই ছাড় দেওয়া হবে না, কোনও মানবিক যুদ্ধবিরতিতে যাবে না ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি জ্বালানিমন্ত্রী এ কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের পক্ষ থেকে গাজার হাসপাতালগুলোর ‘মর্গে পরিণত’ হওয়া এড়াতে জ্বালানি সরবরাহের আহ্বান জানানোর পর তিনি এই মন্তব্য করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার (০৭ অক্টোবর) শত শত হামাস যোদ্ধা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায়। এই হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজা উপত্যকায় হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল। এজন্য তারা গাজায় অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, সর্বাত্মক অবরোধ জারি করেছে এবং বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
হামাসের হামলায় অন্তত ১ হাজার ৩০০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। বেশিরভাগ বেসামরিক মানুষকে বাড়িতে বা রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া শতাধিক সেনা ও বেসামরিক ব্যক্তিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জিম্মিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী শহরগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার পর নিহতের সংখ্যা প্রকাশ হতে শুরু করেছে।
অবরুদ্ধ গাজা ছিটমহলে ২৩ লাখ মানুষ বসবাস করে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০০ জনে। ছয় হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। জ্বালানির অভাবে একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। জ্বালানি না থাকায় হাসপাতালের জরুরি জেনারেটরও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এক বিবৃতিতে ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের আঞ্চলিক পরিচালক ফ্যাব্রিজিও কার্বোনি বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ডিজেলচালিত জেনারেটর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। সহিংসতা বৃদ্ধির ফলে ফলে সৃষ্ট মানবিক দুর্দশা পীড়াদায়ক। আমি বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে অনুরোধ করছি
রেড ক্রসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে হাসপাতালেও বিদ্যুৎ নেই। এতে ইনকিউবেটরে জন্ম নেওয়া নবজাতক ও অক্সিজেনে থাকা বয়স্ক রোগীরা ঝুঁকিতে পড়ছেন। তাছাড়া কিডনি ডায়ালাইসিস ও এক্সরে নেওয়া যায় না। বিদ্যুৎ না থাকলে হাসপাতালগুলো মর্গে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
রেড ক্রসের এমন আহ্বানের পর ইসরায়েলি জ্বালানিমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক্স-এ বলেন, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া ছাড়া কোনও ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেছেন, গাজায় মানবিক সহযোগিতা? যতক্ষণ না পর্যন্ত ইসরায়েলি জিম্মিরা বাড়িতে ফিরবে ততক্ষণ কোনও বিদ্যুতের সুইচ চালু করা হবে না, কোনও পানির পাম্প চালু হবে না, কোনও জ্বালানির ট্রাক প্রবেশ করবে না। মানবতার জন্য মানবতা। কেউ আমাদের নৈতিকতা শিক্ষা দিতে আসবেন না।