নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শৈশব থেকেই পোলিওর সঙ্গে লড়াই সালমা মাহবুবের। তবে সেই লড়াইয়ে হার মানতে হয় কয়েক দশক আগে। হয়ে যান পঙ্গু। এরপর থেকে চলাফেরা করেন হুইলচেয়ারে বসে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন ফরম নিতে সেই বাহনে চড়েই হাজির হলেন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। ঢাকা বিভাগ থেকে সংগ্রহ করলেন মনোনয়ন ফরম।সালমা মাহবুব বলেন, শৈশব থেকেই আমার পোলিওর সঙ্গে লড়াই। গত কয়েক দশক ধরেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কাজ করছি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা বৃদ্ধির আন্দোলন, বাংলা সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা গাইডলাইন প্রণয়ন, বিভিন্ন ভবন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী করে নির্মাণের লক্ষ্যে প্রায় দুই দশক ধরে হুইলচেয়ার নিয়ে ছুটে চলেছি।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে গিয়ে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে আরো বেশি কাজ করতে চাই। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী নারীরা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছেন। এসব বৈষম্য দূর করার জন্য আমার সংসদে যাওয়া প্রয়োজন। আমি আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যেন, আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। আশা করি প্রধানমন্ত্রী আমার মনোনয়ন বিশেষভাবে বিবেচনা করবেন।
মনোনয়ন পেলে কিভাবে কাজ করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রতিবন্ধী মানুষকে নিয়ে এখন কাজ করছি। সামনেও তাদেরকে নিয়েই কাজ করবো। তাদের অনেকগুলো বিষয় এখনো বৈষম্যমূলক। সেগুলো নিরসনে কাজ করবো। সমস্যাগুলো এখন আমার পক্ষে নিরসন করা অনেক কঠিন। আমি মনে করি সংসদ সদস্য হতে পারলে সেগুলো করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। সেজন্য আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।
এর আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছি। এর বাইরে অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নেইনি। আসলে আমি প্রতিবন্ধিতার কারণে নিজে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিতে না পারলেও স্বশিক্ষিত হয়েছি। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জায়গায়, নানান উদ্যোগে প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করেছি এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছি-নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী পরিবারে জন্ম নেওয়া মানুষ। স্বপ্ন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী নারীদেরও কার্যকর অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, রূপকল্প ২০৪১ এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল নাগরিকের জন্য কাজ করতে চাই।