হৃদয়-শামীমের মারকুটে জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ক্রীড়া ডেস্ক :
৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদেই ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাইগাররা। তাওহিদ হৃদয় আর শামীম হোসেন পাটোয়ারীর মারকুটে জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে স্বাগতিকরা।
এরই মধ্যে হৃদয় আর শামীম ২৭ বলে ৪৬ রান যোগ করেছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১১৩। শামীম ১৮ বলে ২৩ আর হৃদয় ১৯ বলে ২৭ রানে অপরাজিত আছেন।
রান তাড়ায় আরও একবার শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। আফগান পেসার ফজলহক ফারুকি উইকেট উপড়ে দেন রনি তালুকদারের (৫ বলে ৪) স্টাম্প। ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুটা করেছিলেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। ওমরজাইকে মিডউইকেট দিয়ে দারুণ একটি ছক্কাও হাঁকান। কিন্তু আরও একবার দৃষ্টিকটু আউটে শেষ হয় শান্তর ইনিংস। বল তার কনুইয়ে লেগে ভেঙে যায় স্টাম্প। ১২ বলে শান্ত করেন ১৪।
লিটন দাস ঠিক টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারছিলেন না। ১৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৮ রান করে ডাউন দ্য উইকেটে ওমরজাইকে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে আসেন এই ওপেনার। ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
৭.২ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ৪১ রান তোলার পর বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ওই অবস্থায় খেলা আর না হলে বাংলাদেশ হেরে যেতো।
তবে বৃষ্টি থেমেছে দ্রুতই। আবারও ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এবার অধিনায়ক সাকিব রানের চাকা ঘোরানোর চেষ্টা করেন। আফগান পেসার ফরিদ আহমেদকে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান, পরের ওভারে রশিদ খানকেও চার মারেন।
কিন্তু মারমুখী হয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব। আগের ওভারে দুই বাউন্ডারি হজম করা ফরিদই বাউন্সি ডেলিভারিতে বাংলাদেশ অধিনায়ককে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ বানিয়েছেন। ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে সাকিব তখন ১৯ রানে।
এর আগে ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল আফগানিস্তান। ১৬ ওভার শেষেও তাদের রান ছিল ১০১। কিন্তু মোহাম্মদ নবি আর আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের এক জুটিতেই চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়ে গেছে আফগানরা।
সাকিব-তাসকিন-মোস্তাফিজদের পিটিয়ে শেষ ৪ ওভারে সফরকারী দল তুলেছে ৫৩ রান। সবমিলিয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ১৫৪।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন তিনি।
ইনিংসের অষ্টম বলেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদকে খেলতে গিয়ে বল বাতাসে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
কভার পয়েন্ট থেকে দৌড়ে গিয়ে রনি তালুকদার দুর্দান্ত এক ক্যাচ তালুবন্দী করে ফেলেছিলেন। কিন্তু উল্টো দিক থেকে দৌড়ে গিয়ে কোনোমতে হাতে জমানো সেই ক্যাচ তিনি পড়ে যাওয়ার পর পড়ে যায় মাটিতে। ১ রানে জীবন পান গুরবাজ।
তৃতীয় ওভারেই উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। নাসুমের বলে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ধরা পড়েন হযরতউল্লাহ জাজাই (১০ বলে ৮)। তার পরের ওভারে তাসকিনের আঘাত। ডানহাতি এই পেসারের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দেন আগে জীবন পাওয়া গুরবাজ (১১ বলে ১৬)।
এরপর শরিফুল ইসলাম নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই তুলে নেন ইব্রাহিম জাদরানকে (৬ বলে ৮)। আগের বলে ছক্কা হাঁকানো জাদরান ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে। ৩২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানরা। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে তোলে মোটে ৪০ রান।
পরের দুই ওভার দেখেশুনে খেলেছে আফগানরা। অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেটর দেখা পান সাকিব। টাইগার অধিনায়ককে ওপরে খেলতে গিয়ে মিডঅফে ধরা পড়েন করিম জানাত (৯ বলে ৩)। দৌড়ে এসে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
সেখান থেকে ৩৬ বল খেলে ৩১ রানের ধীরগতির এক জুটি গড়েন মোহাম্মদ নবি আর নাজিবুল্লাহ জাদরান। ১৪তম ওভারে এই জুটিটি ভাঙেন মিরাজ। টাইগার অফস্পিনারের বল নাজিবুল্লাহর (২৩ বলে ২৩) ব্যাট ছুঁয়ে গেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লিটন। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারায় আফগানরা।
তবে এরপর নবি আর আজমতুল্লাহ ওমরজাই দারুণ জুটি গড়েন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ৩১ বলে ৫৬ রান এনে দেন আফগানদের। ১৯তম ওভারে ওমরজাই সাকিবকে টানা দুই ছক্কা হাঁকান। ওই ওভারেরই শেষ বলে আরেকটি বিগ হিট নিতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে তাসকিনের ক্যাচ হন এই ব্যাটার (১৮ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩)।
ফিফটি তুলে নিয়ে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার নবি। ৪০ বলে তার ৫৪ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর ১টি ছক্কার মার।
বাংলাদেশি বোলারদের সবাই উইকেট পেয়েছেন। শেষের দিকে মার খেলেও তুলনামূলক মিতব্যয়ী ছিলেন সাকিব আর তাসকিন। সাকিব ২৭ রানে ২টি আর তাসকিন ২৯ রানে নেন একটি উইকেট।
একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম, শরিফুল, মোস্তাফিজ আর মিরাজও। এর মধ্যে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন শরিফুল। ৩ ওভারে ৩০ রান দেন তিনি। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে খরচ করেন ৩১ রান।