জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
লালমনিরহাটে ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত মানুষের জীবন। সূর্যের দেখা নেই ১০ দিন। সারাদিন টিপ টিপ শিশির ঝরছে। তীব্র ঠান্ডায় জনজীবনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। গরম কাপড় না থাকায় ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে বিপাকে। ঠান্ডাজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গোটা এলাকা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় মহাসড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে যানবাহন। তীব্র ঠান্ডায় জরুরি কাজ না থাকলে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গ্রামগঞ্জে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে খেটে খাওয়া মানুষ।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের খোকা শেখ (৭৫) বলেন, এই কয়দিনের ঠান্ডায় অবস্থা খুব খারাপ। রাতে ঘুম হয় না, বসে রাত কাটাতে হয়। আর কতদিন যে ঠান্ডা থাকবে?
একই এলাকার মতিয়ার রহমান বলেন, ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। কাজকাম করতে মন চায় না। উপায় না পেয়ে ঠান্ডায় কাজ করতে হচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের ছিন্নমূল দরিদ্র ও শীতার্ত মানুষের জন্য মাত্র ৩০০টি কম্বল পেয়েছি, তা বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় সেগুলো খুবই কম। আরও বরাদ্দ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
তিস্তা চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশার জন্য আলুক্ষেতের অবস্থা খুবই খারাপ। পাতায় পচন ধরে গেছে। বাজার থেকে ওষুধ কিনে স্প্রে করেও উপকার পাচ্ছি না।
হাতীবান্ধা উপজেলার কৃষি অফিসার সুমন মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ও আলুক্ষেতের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, লালমনিরহাটের শীতার্ত মানুষের জন্য এরইমধ্যে ২৪ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও গরম কাপড়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।