ডেস্ক রিপোর্টঃ
সিরিয়ায় মার্কিন সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধারা রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক ইয়াজিদি (ইয়াজিদের অনুসারী) নারীকে মুক্ত করেছে। জানা গেছে, ওই নারীকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এক দশক ধরে বন্দি করে রেখেছিল। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং চরমপন্থীকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স (এসডিএফ) সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সিরিয়ার আল-হাওল ক্যাম্পে কুর্দি যোদ্ধাদের এক নিরাপত্তা অভিযানে ২৪ বছর বয়সী ওই নারীকে তার দুই সন্তানসহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ক্যাম্পে কয়েক হাজার মানুষ বাস করে যাদের বেশিরভাগই আইএস যোদ্ধাদের স্ত্রী-সন্তান।
এসডিএফ জানিয়েছে, ওই নারী মূলত ইরাকের ইয়াজিদি কেন্দ্র সিনজারের হারদান গ্রামের বাসিন্দা। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৪ সালে আইএস চরমপন্থীদের গণহত্যা চলাকালীন ওই নারীকে অপহরণ করা হয়। সে সময় তারা হাজার হাজার পুরুষকে হত্যা করে অসংখ্য নারী এবং কিশোরীকে যৌনদাসী হিসাবে ধরে নিয়ে যায়।
উইমেনস্ প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজে) প্রকাশিত এক ভিডিওতে ভুক্তভোগী নারী বলেন, আল-হাওল ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার আগে তিনি একটি পরিবারের সাথে ছিলেন। সেখানে তাকে তার পরিচয় প্রকাশ করতে বা ইয়াজিদি হিসেবে প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছিল। উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত মিথ্যা নাম নিয়ে সেখানে ছিলেন বলে জানান ওই নারী।
তিনি বলেন “তারা আমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাকে ভেড়ার মতো কেনা-বেচা করেছে তারা।” তিনি আরও জানান, এক সময় তিনি আরও ছয়জন নারীর সাথে আবু জাফর নামে একজন বয়স্ক ব্যক্তির বাড়িতে ছিলেন। যৌনকর্মে অসম্মতি জানালে তাকে প্রচণ্ড মারধর করতেন আবু জাফর। তিনি বলেন, “যেসব নারী ধর্ষণে বাধা দিত, তাদের হত্যা করা হতো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সিরিয়ার কুর্দি-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর তত্ত্বাবধানে কঠোরভাবে সুরক্ষিত আল-হাওল শিবিরে একসময় ৭৩ হাজার লোক বাস করত, যাদের অধিকাংশই সিরিয়া এবং ইরাকের নাগরিক ছিলেন। আল-হাওল থেকে বহু নারী ও শিশুকে প্রত্যাবাসন করায় প্রতি বছর মানুষের সংখ্যা কমছে।
আল-হাওলের বাড়িগুলো বেশিরভাগ ইরাকি এবং সিরিয়ান। তবে প্রায় ৬০টি অন্যান্য জাতীয়তার নাগরিকও রয়েছে সেখানে। ইরাকি ও সিরিয়ানদের আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছে। তারা অ্যানেক্স নামের শিবিরের একটি অংশে বাস করে। এই এলাকা সবচেয়ে কট্টর আইএস সমর্থকদের বাস বলে মনে করা হয়। ২০১৪ সালে আইএস পুরো অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের অনেকেই চরমপন্থী এই দলে যোগ দিতে কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এসেছিল।এসডিএফ বলেছে, অভিযানের প্রথম দিনে ২১ আইএস জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, ল্যান্ড মাইন এবং টানেল উন্মোচিত করা হয়েছে।