মোঃ সাইফুল ইসলাম:
চলতি বছর ১৫৩৩টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজে হাজী পাঠানোর অনুমোদন দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরমধ্যে পর্যাপ্ত হাজী না পাওয়া ছোট ছোট এজেন্সিগুলো ২৩৪টি বড় এজেন্সির সঙ্গে একত্রিত করা হয়েছে। যাকে বলা হয়েছে লিড এজেন্সি। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সৌদি সরকারের এসব লিড এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করবে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তি এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০২৪ সনে হজের সৌদি আরব পর্বের যাবতীয় ব্যয় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ হজ অফিস, জেদ্দার ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে হবে। বাংলাদেশ হজ অফিস, জেদ্দার ব্যাংক হিসাব হতে এজেন্সির ওইঅঘ হিসাবে অর্থ গ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে হজযাত্রী সমন্বয়ের মাধ্যমে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে হজযাত্রী সমন্বয় করা হলেও হজযাত্রীর অর্থ সমন্বয়কারী এজেন্সি হতে লিড এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়নি।
এছাড়া, ইতোপূর্বে হজযাত্রীর সংখ্যানুসারে প্রয়োজনীয় অর্থ সোনালী ব্যাংক, রমনা কর্পোরেট শাখায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ‘অএঊঘঈণ চওখএজওগঝ ঋটঘউ চঅণইখঊ ঞঙ কঝঅ’ শিরোনামে ৪৪২৬৩০২০০৩৭৬৫ নং হিসাবে জমাদানের জন্য প্রত্যেক লিড এজেন্সিকে অনুরোধ জানানো হলো।
যে সকল হজ এজেন্সি সর্বনিম্ন ২৫০ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করতে পারেনি এমন এজেন্সি কয়েকটি এজেন্সির সমন্বয়ে একটি লিড এজেন্সি নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য এজেন্সির মালিকদের এরই সমন্বয় করার জন্য বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর আগে গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা হজ অফিসে নিবন্ধিত হজ এজেন্সির মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে। সেখানে সমঝোতার মাধ্যমে লিড এজেন্সি চূড়ান্ত করা হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদি সরকার ২০২৪ সালের হজের জন্য বাংলাদেশসহ সব দেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা প্রথমে দুই হাজার জন এবং পরে ৫০০ জন নির্ধারণ করে পত্র প্রেরণ করে। সর্বনিম্ন কোটা ৫০০-এর পরিবর্তে আগের মতো ১০০ হজযাত্রী বাংলাদেশের সব এজেন্সিকে পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সৌদি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার চিঠিতে বলেন, সব শেষ গত ২৪ জানুয়ারি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার এইচ ই ড. আব্দুলফাত্তাহ সুলাইমান মাসহাট এবং হজ অ্যাফেয়ার্স অফিসের মহাপরিচালক ড. বদর আলসোলাইমিকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানান। এরপর গত ২৬ জানুয়ারি ভাইস মিনিস্টারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা ৫০০-এর পরিবর্তে ২৫০ জন নির্ধারণ করেন।
এরপরও যেসব এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫০-এর কম, সেসব এজেন্সিকে অন্য এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে হজযাত্রী পাঠাতে হবে।
এ বিষয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ অনুবিভাগ) মতিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সৌদি সরকার চাহিদার অনুযায়ী এমনটা করা হয়েছে। কারণ বেশি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী নিতে চাচ্ছে না সৌদি। যোগাযোগসহ নানা সুবিধার জন্য তারা কমসংখ্যক এজেন্সির মাধ্যমে হজযাত্রী পাঠাতে বলেছে তারা। এটাই ভালোই হয়েছে। কোনো সমস্যা হবে না। অনেক এজেন্সির বেশিসংখ্যক হজযাত্রীকে সেবা দেওয়া অভিজ্ঞতা আছে।
হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক হজ এজেন্সি শুধু হজযাত্রী ট্রান্সফার করে। এরপর হজযাত্রীর জমা টাকা নিতে নানা ধরনের ঝামেলায় পড়তে হয় লিড এজেন্সিকে। কোনো এজেন্সি যথাসময়ে টাকা না দিলে হজযাত্রীও নানা বিড়ম্বনার শিকার হন। এবার যেহেতু অনেক বেশি হজ এজেন্সির দায়িত্ব কয়েকটি এজেন্সিকে নিতে হবে, তাই এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে সঠিকভাবে তদারকি করতে হবে।