
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
১৯৮৬ সালে প্রথম সরকারিভাবে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হলেও ২ বছর পর তা নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ২০১৬ সালে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার ৫ দিনের মাথায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বলতে গেলে ৫ দিন বাদে দীর্ঘ ৩৬ বছর অ্যাম্বুলেন্সসেবা বঞ্চিত ছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলাবাসী। এতদিনের দুঃখ ঘুচে ফের অ্যাম্বুলেন্সের দেখা মিললো তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এতদিন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে ভাড়া করা অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হতো স্বজনদের। এতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ে দ্বিগুণ টাকা ভাড়া গুণতে হতো। আবার অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া গেলে মাইক্রোবাস অথবা ভ্যান ও ইজিবাইকে করেই রোগীদের নেওয়া হতো শহরে।
তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুইটি অ্যাম্বুলেন্স পায় দুই বছর আগে। একটি একেবারে নতুন অবস্থায় ছিল। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এরফান আহমেদ যোগদানের পর অ্যাম্বুলেন্সের বিশেষ চাহিদা অনুভব করেন ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন। সরকারের নতুন বরাদ্দ না থাকায় মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই বছর আগের পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপজেলা হেলথ কেয়ার (ভিএইচএস)। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) অ্যাম্বুলেন্সটি তাড়াশে আনা হয়।
এদিকে নতুন অ্যাম্বুলেন্স পেয়ে এলাকাবাসী বেশ খুশি। তাড়াশ উপজেলা নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, জীবন বাঁচাতে ওষুধ যেমন অপরিহার্য, অ্যাম্বুলেন্সও অতি প্রয়োজনীয়। কয়েক যুগ পর হলেও অ্যাম্বুলেন্সসবা নিশ্চিত করলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
জানা যায়, তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯৮৬ সালে সরকারিভাবে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। যার নম্বর সিরাজগঞ্জ-ব-৩। দুই বছর পর গাড়িটি নষ্ট হলে অর্থের অভাব ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সেই থেকে হাসপাতাল আঙিনার এক পাশে জঙ্গলের মধ্যে ধুলোবালির আস্তরণে মরিচা ধরে সম্পূর্ণ বিকল হয়ে পড়ে আছে গাড়িটি। ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে বেশকিছু মূল্যবান যন্ত্রাংশ। নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি ২০১৬ সালে হস্তান্তরের পাঁচদিন পর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না থাকায় বিআরটিএ মেরামতের অনুমোদন দেয়নি অদ্যবদি।
তাড়াশ পৌর এলাকার মো. শামীম হোসেন বলেন, তিন মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যায় আমার। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় এরই মধ্যে তিনবার মাইক্রোবাস নিয়ে বগুড়া সজিমেক হাসপাতালে গিয়েছি। ভাড়ার মাইক্রোবাস নিয়ে যেতে অতিরিক্ত টাকা গুণতে হয়। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এরফান আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, আড়াই মাসের মতো হচ্ছে আমি তাড়াশে যোগদান করেছি। চেষ্টার কোনো কমতি ছিলনা একটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য। শেষমেশ ২৮০০ সিসি একটি উন্নত মানের অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ পাওয়া গেল।