৭ ঘণ্টা পর মুক্ত হলেন অবরুদ্ধ বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডি
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
টানা ৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশি পাহারায় নিজ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গেলেন বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রফিকুল আলমসহ পর্ষদ সদস্যরা।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় রাজধানীর সেনা কল্যাণ ভবনে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বোর্ড সভায় বসে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।
বিকেল থেকেই বেতন কমানোর সার্কুলার বাতিলের দাবিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ করেন বেসিক ব্যাংকের কর্মীরা। তারা সভা কক্ষের বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল আলমসহ পর্ষদের আরও ৬ পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। বেতন কমানোর সার্কুলার বাতিল না করলে তাদের বের হতে দেয়া হবে না বলে জানান ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের দাবি, ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী বেতন কাঠামো দেখে আমরা নিজ যোগ্যতায় চাকরি নিয়েছি। এখন বেতন কমানো অযৌক্তিক। বোর্ডের অদক্ষতা, অযোগ্যতা, অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণে ব্যাংক লোকসানে পড়েছে। পর্ষদের ব্যর্থতার দায়ভার আমরা নেব কেন? এটা আমরা মানি না। তাই অনতিবিলম্বে বেতন কমানোর সার্কুলার বাতিলের দাবি জানান কর্মীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বিকেল থেকে সেনা কল্যাণ ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন। তারা বেতন কাঠামো কমানোর সার্কুলার বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এরপর ৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর রাত দশটার দিকে আন্দোলনকারী প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন বেসিকের পরিচালনা পর্ষদ।
একই সঙ্গে দশটার দিকে সেনা কল্যাণ ভবনের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। বৈঠকে আন্দোলনকারী প্রতিনিধিদলকে আশ্বাস দেন, আগামী বোর্ড মিটিংয়ে তাদের দাবি বিবেচনা করা হবে। পর্ষদের এই আশ্বাস বাইরে অবস্থানরত আন্দোলনকারী কর্মীরা না মেনে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরবর্তীতে রাত পৌনে ১১টার সময় পুলিশি পাহারায় বেরিয়ে যান পর্ষদ সদস্যরা।
এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে বেতন কাঠামো নির্ধারণের নির্দেশনা জারি করেছিল বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কমে যাবে ব্যাংকটির সর্বস্তরের কর্মীদের বেতন। এ কারণে বেসিক ব্যাংকে কর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর থেকেই নিয়মিত বিক্ষোভ করছে বেসিক ব্যাংকের কর্মীরা।
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে সার্কুলার জারি করে কর্তৃপক্ষ। যা ওইদিন থেকেই কার্যকর করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকে গত সাত বছর ক্রমাগত লোকসান হওয়ায় বিদ্যমান অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ব্যাংকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এতে ব্যাংকের বিদ্যমান বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধাদি বাতিল করা হলো।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যাংকটিতে কর্মরতদের বেতন কমানোর নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওইদিন বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান করেছেন। মাত্র ৭২টা শাখার জন্য এখানে প্রায় ২১০০ জনবল আছে। এত লোকের এখানে কী কাজ?’