‘অঞ্জনা সারাক্ষণ সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন’

প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২৫


বিনোদন ডেস্ক:

 

নন্দিত নৃত্যশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী অঞ্জনা রহমান ৩ জানুয়ারি রাতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। নাচ দিয়ে প্রথমে সবার কাছে পরিচিতি পেলেও পরবর্তীকালে তিনি উপহার দিয়েছেন অনেক দর্শকপ্রিয় সিনেমা। চলচ্চিত্রের ইতিহাসের পাতায় তাঁর নামটি সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। আপন সৃষ্টিকর্ম তাঁকে স্মরণীয় করে রাখবে। এই শিল্পীকে নিয়ে সহকর্মীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি…
সোহেল রানা
‘দস্যু বনহুর’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগে থেকেই নাচের জন্য পরিচিত ছিলেন অঞ্জনা। তখন থেকেই তাঁকে আমি চিনতাম। আমি তখন কলেজে পড়ি। তাঁকে চিনি তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে যখন নাচের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। অঞ্জনার সঙ্গে যাদের পরিচয় ছিল, তারা জানেন যে তিনি কেমন চঞ্চল, প্রাণবন্ত। সারাক্ষণ সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন। শুটিং সেটেও তিনি একইরকম ছিলেন। তাঁকে কখনও কারও বিষয়ে ব্যাক টক [পেছনে কথা বলা] করতে দেখিনি। কাজের সময় সিরিয়াস ছিলেন। বাংলাদেশে অঞ্জনার মতো এতো ভালো নৃত্যশিল্পী তেমন নেই। পাকিস্তান, নেপাল, তুরস্কের সিনেমায় তিনি কাজ করেছেন। সেসব ছবিও বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। দোয়া করি, সৃষ্টিকর্তা তাঁকে বেহশত নসিব করুক।
ববিতা
অঞ্জনার সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের। ‘প্রিয় বন্ধবী’, ‘সুখে থাকো’সহ অসংখ্য সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছি। আউটডোরে দু’জনের অনেক স্মৃতি রয়েছে। শুটিংয়ে সে সবাইকে মাতিয়ে রাখত। কথা বলত অনেক মজা করে। বেশির ভাগ সিনেমায় তাকে আমার বোন অথবা দ্বিতীয় নায়িকার হিসেবে পেয়েছি। আউটডোরে শুটিংয়ে গেলে আমার একা শুতে ভয় লাগত বলে তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমাতাম। এখন আমার কানাডায় কাটে বেশির ভাগ সময়। প্রায়ই আমার খোঁজ-খবর নিত। অঞ্জনার এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া অনেক কষ্টের। সৃষ্টিকর্তা তাকে ভালো রাখুক– এটাই কামনা করছি।
নূতন
অঞ্জনার সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের পথচলা। আমরা দু’জন বোনের মতো ছিলাম। যেখানেই যেতাম, আমরা এত হাসিঠাট্টা করতাম, সবাই ভাবত আমরা আপন দুই বোন। হাসিখুশি মানুষটি আমাদের মাঝে নেই মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। ডিসেম্বরের ৬ তারিখে সবশেষ দেখা হয়েছিল। আর দেখা হবে না ভাবতেই শূন্যতা অনুভব করছি।
আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল
চলচ্চিত্রে নায়িকা হওয়ার আগে তিনি এ দেশের একজন খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী ছিলেন। আমি দেখেছি, সে সময় বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথি থেকে সরকারি বড় বড় অনুষ্ঠানে তাঁর নাচের ডাক পড়ত। সবাই তাঁর নাচের প্রশংসা করতেন। পরবর্তী সময়ে চলচ্চিত্রে এসেও অনেক কালজয়ী সিনেমায় তিনি তাঁর মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। এভাবে আমরা সবাই একদিন চলে যাব, আমাদের কাজই থেকে যাবে। যারা চলে গেছেন, তাদের স্মৃতি যেন আমরা সব সময় স্মরণ করি।
মিশা সওদাগর
অঞ্জনা আপার এ শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। একজন ভালো শিল্পীর বাইরে অসম্ভব ভালো একজন মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁর প্রাণবন্ত ও হাসিমাখা মুখ মিস করব। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
শাবনূর
আমার অগ্রজ সহকর্মী, নন্দিত চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী শ্রদ্ধেয় অঞ্জনা রহমান আর আমাদের মাঝে নেই তা ভাবতেই পারছি না। এইতো মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আমার জন্মদিনে, আমাদের দু’জনের একসঙ্গে তোলা কিছু ছবি দিয়ে উইশ করে তিনি তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। আমাকে নিয়ে লিখেছিলেন প্রশংসাসূচক নানা কথা। আপার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। গুণী এ শিল্পীর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।