ক্রীড়া ডেস্ক:
এক বছরের বেশি সময় পর বাফুফেতে ফিরেছেন। মেয়েদের নয়, এলিট একাডেমির কোচ হিসেবে। নতুন দায়িত্বে ফিরলেও ঘুরেফিরে বাংলাদেশ নারী দলের প্রসঙ্গটি আসছেই। তবে গোলাম রব্বানী ছোটনের কাছে সেটা এখন অতীত। বাফুফে এলিট একাডেমিসহ আরও নানা বিষয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
আপনার পরিচিতিটা নারী দলের কোচ হিসেবে। এখন তো ছেলেদের কোচিং করাবেন।
ছোটন : আমি কিন্তু অতীতে ছেলেদের কোচিং করিয়েছিলাম। নব্বইয়ের পরে তৃতীয় লিগের ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আর ২০০৬ সালে বিভিন্ন জেলায় বয়সভিত্তিক টিমের ট্রেনিং করিয়েছি। সেই সময় ডেভেলপমেন্ট কমিটির অধীনে কাজ করেছিলাম। ২০০৮ সালে সিনিয়র জাতীয় দলে সহকারী কোচের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। এস এ গেমসকে সামনে রেখে ২০০৯ সালে শহিদুর রহমান সান্টু আমাকে নারী দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিয়েছিলেন। এর পর ২০১০ সালে কক্সবাজারে সাফ ফুটবলে হেড কোচ হিসেবে ডাগআউটে দাঁড়িয়েছিলাম। আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছেলেদেরও কোচিং করিয়েছি আমি।
তার পরও নারী দলের কোচ থেকে ছেলেদের কোচ। চ্যালেঞ্জ কেমন মনে করছেন?
ছোটন : নারী আর ছেলে দলের কোচ হিসেবে আমি পার্থক্য মনে করি না। আপনি হয়তো জানেন, আমাদের নারী ফুটবল দলের অবস্থা একসময় খুবই খারাপ ছিল। নতুন ছিল সবাই। তারা যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন এত ভালো ফুটবল খেলতে পারে, আর ছেলেরা তো তাদের চেয়ে বেটার ফুটবল খেলেই আসে। আমি মনে করি, এলিট একাডেমির ফুটবলারদের যদি শেখার একটি পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া হয়, সবকিছু স্বচ্ছতা থাকে, অবশ্যই উন্নতি করা সম্ভব।
বয়সভিত্তিক দলগুলো সাফে ভালো করলেও এএফসিতে পারছে না?
ছোটন : আপনার টার্গেটই হতে হবে ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে উন্নতি করা। একটা সময় মেয়েদের ম্যাচের সময় আমাদের চিন্তা ছিল গোলটা যেন কম খাই। সেখান থেকে লক্ষ্য ছিল আস্তে আস্তে উন্নতি করব এবং জিতব। সেটাই কিন্তু হয়েছে। ছেলেদের ক্ষেত্রেও একই। জেতার চিন্তা না করে পারফরম্যান্সে মনোযোগ দিতে হবে। আরেকটা বিষয়, স্যাক্রিফাইস। মেয়েরা ঈদ, পূজায় বাড়ি যায়নি। তারা প্রচুর কষ্ট করেছে। তাদের সাধনায় ছিল, একটা কিছু করতে হবে। এ জন্যই আজ সাফল্য এসেছে। আমি চাই, এলিট একাডেমির ছেলেরাও সারাক্ষণ ফুটবল নিয়ে ভাববে। তখন অটোমেটিক উন্নতি হবে। আমরা কিন্তু এখনও সাফের মধ্যেই আছি। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। চিন্তাভাবনা থাকতে হবে, এএফসিতে ভালো করতে হবে।
মেয়েরা চেয়েছিলেন আপনি বাফুফেতে ফেরেন তাদের কোচ হিসেবেই। শুনেছি অনেকে মন খারাপ করেছেন।
ছোটন: সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমি অতীতে কোথায় ছিলাম, সেগুলো নিয়ে আর পড়ে থাকতে চাই না। অতীত নিয়ে ভাবতে চাই না। আমার অনেক দিনের একটা স্বপ্ন ছিল এলিট একাডেমির দায়িত্ব নেওয়ার। ভেতরে ভেতরে সুপ্ত বাসনা ছিল আমার যে প্লেয়ার কীভাবে তৈরি করা যায়, এ রকম একটা জায়গায় যুক্ত হওয়া। আমি মনে করি, ওই সুযোগটি আমার এসেছে। এতদিন জাতীয় দলের চিন্তা ছিল, এখন চিন্তাটা হলো একাডেমিতে গিয়ে ফুটবলার তৈরি করা। আমি খুব ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে চাই।