অথৈ জলরাশিবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন নির্জন শ্মশানে নবজাতকে কেউ ফেলে গেছে

প্রকাশিত: ৫:৩৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২৩

নেত্রকোনা প্রতিনিধি:

হয়তো কারো কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত জন্ম। অথৈ জলরাশিবেষ্টিত দ্বীপ-সদৃশ এক নির্জন শ্মশানে কে কখন ফুটফুটে নবজাতককে ফেলে দিয়ে এসেছে, কেউ জানে না। তবে রাখে আল্লাহ মারে কে! জয় বানু নামের এক নারীর হাতে উদ্ধার পেয়েছে পরিত্যক্ত ওই নবজাতক। ঘটনাটি এখন এলাকার সবার মুখে মুখে।

ফেসবুকেও ছড়িয়েছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিকেলে জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের গাগলাজুর গ্রাম এলাকার চৌরাপাড়া শ্মশান থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়। চৌরাপাড়া শ্মশান প্রসিদ্ধ ডিঙ্গাপুথা হাওরের বিশাল জলরাশি পরিবেষ্টিত ছোট্ট একখণ্ড উঁচু ও নির্জন ভূমি।
জানা যায়, মোহনগঞ্জের মান্দারুয়া গ্রামের সরাজ মিয়ার স্ত্রী জয় বানু তার ছেলে তপন মিয়াকে নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে নৌকায় করে হাওরের চৌরাপাড়া শ্মশানঘাটের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।

এ সময় ওই শ্মশানঘাটের দিক থেকে তাদের কানে শিশুর কান্নার আওয়াজ আসে। আশপাশে কোনো লোকজন ছিল না। এতে প্রথম দিকে তারা ভয় পেয়ে যান। পরে আগ্রহ থেকে তারা নৌকা ভিড়িয়ে শ্মশানঘাট থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় নবজাতকটিকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে এসে প্রতিবেশীদের জানান।
অনেকেই নবজাতকের ছবি তুলে বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।
জয় বানু বলেন, ‘নবজাতকের যত্নের কোনো ত্রুটি হচ্ছে না। তাকে কৌটার দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। শারীরিক কোনো সমস্যা নেই। আসল বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়া না গেলে শিশুটিকে আমিই লালন-পালন করব।

এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাসুল তালুকদার স্থানীদের বরাতে জানান, মান্দারুয়া গ্রামের জয় বানু ডিঙ্গাপুথা হাওরের চৌরাপাড়া শ্মশানঘাট থেকে পরিত্যক্ত এক নবজাতককে (কন্যা) উদ্ধার করেছেন। নবজাতকের বয়স এক বা দুই দিন হতে পারে। হয়তো কেউ এ ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য নবজাতকটিকে বিসর্জন দিয়েছেন। তবে জয় বানুর কোলে শিশুটি ভালোই আছে। তার বাবা-মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী করণীয় ঠিক করা হবে।