সাইফুল ইসলাম:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, যারা অস্বাভাবিক পথে অবরোধ করছে, চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে এবং জনগণের জানমালের ক্ষতি করছে তাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন এবং ধরিয়ে দিন। আজ বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, চলমান অবরোধ কর্মসূচি সংবিধান ও জনবিরোধী। জনগণের যান চলাচল বিঘ্নিত করা দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যারা অবরোধে জড়িয়েছে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
গত ২৮ অক্টোবরে হামলা নাশকতা, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ পুলিশ হত্যায় জড়িত কতজনকে পুলিশ শনাক্ত করেছে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের যেভাবে ওপর হামলা করা হয়েছে জড়িতরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। যেভাবেই আত্মগোপন করুক না কেন কোনোভাবেই তারা ছাড় পাবে না। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করবেই। এজন্য পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করছে। এরই মধ্যে আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও আসামি গ্রেফতার করা হবে।
২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে। সেই অবরোধ কর্মসূচির কারণে নাশকতা হচ্ছে, বাস জ্বলছে, ভীতি ছড়িয়েছে। গণপরিবহন চলাচল সীমিত হয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবরোধ কর্মসূচির নামে যা চলছে তা জনবিরোধী। জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচলবিরোধী। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যারা অবরোধে জড়িয়েছে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বিএনপি মহাসমাবেশের নামে ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, পুলিশের কাজে বাধা এবং একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে একজন বাংলাদেশি হাজির করেছেন। তিনি মিডিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। যা দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী। প্রচলিত আইনে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের একজনকে আমরা এরই মধ্যে গ্রেফতার করেছি। আরও যারা জড়িত ছিলেন তাদের আমরা গ্রেফতার করবো। প্রচেষ্টা চলছে।
২৮ অক্টোবর পুলিশ শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ উপায়ে মহাসমাবেশ আয়োজনে ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারতো কি না, বা যা ঘটেছে তা এড়াতে পারতো কি না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ সেদিনকার ঘটনা দেখেছে। পুলিশ নয় তারাই একের পর এক উসকানি দিয়েছে। দলটির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলেছে, যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের সামলান না হলে আপনাদেরই মহাসমাবেশ কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে। একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তারা কিছু করেননি। পরবর্তীতে হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর আক্রমণ, পুলিশ সদস্য হত্যাসহ যে ধ্বংসযজ্ঞ তারা চালিয়েছে, বিশৃঙ্খলা করেছে। এটাই প্রমাণ করে যা যা ঘটেছে তাতে তাদের সায় ছিল, তাদের নির্দেশক্রমেই ঘটনাগুলো ঘটেছে।