আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জে আড়াইহাজারে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের প্রথমদিনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলির আওয়াজ ও ইট পাটকেল ছুড়াছুড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আহত পুলিশের সদস্যরা হলেন- আড়াইহাজার থানার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্লা, এএসআই মতিন, কনস্টেবল নজরুল হক। তাদের মধ্যে কনস্টেবল নজরুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিএনপির গুলিবিদ্ধরা হলেন- বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জুয়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহবায়ক মুছা, জেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলম, বিশনন্দী ইউনিয়ন বিএনপির মুজিবর ও খাজা মাঈনুদ্দিন।
স্থানীয়রা জানান, অবরোধের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগুন দিয়ে রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও পুলিশের ওপর পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়াশেল রাবার বুলেট ছুড়ে। পরে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও যুক্ত হয়। শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। প্রায় কয়েকঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে। পওে অতিরিক্ত পুলিশ এসে অবরোধকারীদের ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উসকানিতে পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। পুলিশের গুলিতে আমাদের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশ আমাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ ও র্যাবের পাহাড়ায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের ডিউটিরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। আমাদের বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে তারা। তাদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলাকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।