অবেশষে মেকআপ

প্রকাশিত: ৪:১০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক:

 

 

সিনেমা বলতে আমার বুঝি, একটি গল্প; যার চরিত্রগুলো নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট একটি সময় দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে। তাদের কাঁদাবে, হাসাবে, যাপিতজীবন, সমাজ-সংসার থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিবর্তন নিয়ে ভাবনার খোরাক জোগাবে। তাই সমকালীন জীবনধারা, প্রণয় আখ্যান কিংবা কল্পনার ফ্যান্টাসি জগতের সেই গল্প যেমনই হোক, তা দর্শক-হৃদয় স্পর্শ করতে পারছে কিনা এটিই দেখার বিষয়।

ইতিহাস বিকৃতি না করে ঐতিহাসিক ঘটনা ও চরিত্র নিয়ে সিনেমা হতে পারে এবং অহরহ নির্মিত হচ্ছে। সবকিছু জেনে এবং নীতিমালা মেনে সিনেমা নির্মাণের পর তা সেন্সর বোর্ড (বর্তমানে সার্টিফিকেশন বোর্ড) নামক কারাগারে আটকা পড়লে হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। এমন অভিমত ‘মেকআপ’ সিনেমার শিল্পী, নির্মাতা থেকে শুরু করে প্রত্যেক কলাকুশলীর। তাদের কথায় এও স্পষ্ট যে, কোনো একটি অজুহাতে দেশীয় সিনেমাকে নিষিদ্ধ করার এক ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে বিভিন্ন সময়। তেমনই এক নিষিদ্ধের বেড়াজালে আটকা পড়েছিল অনন্য মামুন পরিচালিত ‘মেকআপ’ সিনেমাটি। তারপরও সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবাই আশায় বুক বেঁধে ছিলেন, কোনো এক সময় বিষয়টির সুরাহা হবে। এবার সেই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফিরে এসেছে, নিষিদ্ধের বেড়াজাল থেকে ‘মেকআপ’ সিনেমাটি মুক্তির ঘোষণায়। তিন বছর পর মুক্তির মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছে সিনেমাটি।

এ নিয়ে পরিচালক অনন্য মামুন বলেন, ‘‘অনেক যতœ নিয়ে যে কাজটি করেছি, তা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শক– এটি সত্যি আনন্দের। একই সঙ্গে স্বস্তির গল্প বলার স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ায়। আমরা কখনও এমন কোনো কিছু পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টা করিনি, যার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ‘মেকআপ’ সিনেমাটি দর্শকের দেখার অযোগ্য। সিনেমা হলে গেলেই দর্শকের কাছে স্পষ্ট হবে, বিতর্ক তৈরি হওয়ার মতো কোনো কিছু সিনেমায় রাখা হয়নি। এর গল্প ফ্রেমবন্দি শিল্পীজীবন নিয়ে। এতে দেখানো হয়েছে, মেকআপের আড়ালে কেউ কেউ জীবনের অনেক সত্য লুকিয়ে রাখেন। মেকআপ তুলে তাদের ফিরতে হয় আপন ঠিকানায়; যেখানে মেকআপ থাকে না, সেখানে থাকে শুধু সত্য।

এক কথায়, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ভেতরের এবং শিল্পীদের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু ঘটে, তারই কিছু দৃশ্যপট গল্পের মধ্যে দিয়ে সিনেমায় তুলে আনা হয়েছে। তাই সেন্সর বোর্ড এ সিনেমা প্রদর্শনের অযোগ্য বলায় যেমন কষ্ট পেয়েছি, তেমনি হয়ছি বিস্মিত। এখন আমার চাওয়া একটাই, দর্শক সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখুন, তাহলেই এর ভালো-মন্দ সবদিক তাদের কাছে স্পষ্ট হবে।’’ পরিচালকের মতো একই মত এ সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক হতে যাওয়া অভিনেত্রী রিয়েলির।

তাঁর কথায়, ‘আমরা এমন কোনো কিছুই করিনি, যা নিয়ে সিনেমাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। তাই দুইবার নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বিশ্বাস ছিল, দেরিতে হলেও দর্শক সিনেমাটি দেখার সুযোগ পাবেন।’

অভিনেতা রোশানের কথায়, ‘মেকআপ’ নিষিদ্ধ হবে সেটি কখনও মনে হয়নি। সত্যি কথা বলতে, অভিনেতা হিসেবে এটি নিষিদ্ধের কারণও আমি খুঁজে পাইনি। এ বিষয়ে সেন্সর বোর্ড সদস্যরাই ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। যাই হোক শেষ পর্যন্ত সংশোধনীর জন্য সিনেমা থেকে ১ মিনিট কেটে নিয়ে বোর্ড সেন্সর সার্টিফিকেশন দিয়েছে এবং আগামীকাল ‘মেকআপ’ মুক্তি পাচ্ছে– এটিই ভালো লাগার। শিল্পী হিসেবে সবসময়ের চাওয়া, অনেক শ্রম-ঘাম ঝরিয়ে যে কাজটি ভালো করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, তা দর্শক দেখুক।