
ক্রীড়া ডেস্ক:
চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় ছিল অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ দল। কেননা এই দুই দেশ এই আসরে সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল নিয়ে শিরোপার মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। ২০১৭ সালের আসরে খেলা সাত খেলোয়াড় নিয়ে এবারের আসরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া আর তার থেকে একজন কম অর্থাৎ ছয় জন নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ।
ঐ দলের মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ এবারও আছেন। ধারণা করা হচ্ছিল এবার তারা পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দারুণ পারফর্ম করবেন। তবে বোলাররা তাদের কাজ ঠিক মতো করলেও ব্যাটাররা ব্যর্থ। বিশেষ করে দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চূড়ান্ত পর্যায়ে। বড় ভাইদের পথে হাঁটছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের ব্যর্থতার ছাঁপ কাটাতে ব্যাট হাতে লড়ে দলের তরুণ ব্যাটাররা। তবে যেখানে সিনিয়ররা ব্যর্থ সেখানে তরুণরা আর কতটাই বা করবে?
আসরের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে কোনোরকম প্রতিরোধ করতে না পেরেই হেরেছে। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচটি রাওয়ালপিন্ডিতে ঘুরে দাঁড়ানোর। ম্যাচের আগে কোচ বলেছিল তারা প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা খুঁচিয়ে ছন্দে ফিরতে প্রস্তুত। তবে মাঠে তেমনটি মনে হয়নি। দলে দুইটি পরিবর্তন নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামলেও ফলাফল সেই একই ছিল। যেখানে আগে ব্যাট করে ৩০০ রানের বেশি করলেও জয় নিশ্চিত নয়। ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা রান তুলতে ধুঁকেছে।
অধিনায়ক নাজমুল হোসন শান্ত আর জাকের আলী অনিকের ব্যাটে টেনেটুনে ২৩৬ রানের পুঁজি দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এই আসরে টাইগার স্কোয়াডে যাদের ওপর নজর ছিল তারাই রীতিমতো হতাশ করেছেন। যদিও এমনটি নতুন নয়। গেল দুই-তিন বছর ধরেই দলের হাল এমনই। সোমবার বাংলাদেশ আগে ব্যাট করতে নেমে দেখে শুনে খেলতে থাকে। ভারতের বিপক্ষে স্কোয়াডের থেকে সৌম্য সরকার বাদ পড়ায় এই ম্যাচে তরুণ ওপেনার তানজিদ তামিমের সঙ্গে নামের অধিনায়ক শান্ত। দেখে শুনে খেলতে থাকেন তারা। তবে দলীয় ৪৫ রানে তানজিদ আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তারপর মেহেদী হাসান মিরাজ আর সবশেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি করা তাওহীদ হৃদয়ও দ্রুতই ফেরেন।
৯৭ রানে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। তখনও উইকেটে এক পাস আগলে ধরে রেখেছিল শান্ত। রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি। অপেক্ষা করছিলেন একটি যোগ্য সঙ্গীর। যেহেতু দলে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার রয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তাই ধারণা করা হচ্ছিল শান্তর সাথে যে কোনো একজন জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনার থেকে টেনে তুলবেন। কিন্তু যেমন ভাবনা আর তেমন হয়েছে কই। একে একে তারা এসে দৃষ্টিকটু শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে দলকে আরো বিপদে ফেলেছেন। যেখান থেকে শেষ অবধি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
ভারতের বিপক্ষে মুশফিকুর রহিম ফিরেছিলেন রানের খাতা খোলার আগেই তবে গতকাল পেয়েছেন ২ রান। অন্য দিকে চোটের কারণে প্রথম ম্যাচে ছিলেন না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সমর্থকদের মতে ঐ ম্যাচে তিনি থাকলে হয়তো বাংলাদেশের সংগ্রহ আরও বেশি হতো। তাই কিউইদের বিপক্ষে ঐ ম্যাচে ০ রানে আউট হওয়া সৌম্য সরকারকে বাদ দিয়ে রিয়াদকে নেওয়া হয় এই দলের স্কোয়াডে। তিনি এসে খেলেছেন ১৪ বলে চার রানের ইনিংস।
এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের থেকে নিজের দিকে রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদও বেশি রান করেছেন। দলের প্রায় কম অভিজ্ঞ জাকের আলীও দুই ম্যাচ ধরে দলের হাল ধরছেন গেল দুই ম্যাচ ধরে। তরুণ ব্যাটাররাও বোঝে ম্যাচের কোন মুহূর্তে কোন ছন্দে ব্যাট করতে হয়, উইকেটে থিতু হতে হয় সেখানে দীর্ঘ দেড় যুগের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট হাতে আচরণ যেন তাদের অভিষেক হয়েছে সদ্যই।