অমির পাশে দাঁড়ালেন পলাশ-মনিরা মিঠু

প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক:

কোমল পানীয় কোকাকোলার বিজ্ঞাপন নিয়ে উত্তাল দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সম্প্রতি কোকাকোলা বিরোধী প্রচারণা বন্ধের জন্য একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে দাবি করা হয়েছে, কোকাকোলা ইসরায়েলি পণ্য নয়। এরপরই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে এই প্রতিষ্ঠান।

ওই বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন ব্যাচেলর পয়েন্ট খ্যাত অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন, শিমুল শর্মা, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু প্রমুখ। কোকাকোলার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনে যারা অভিনয় করেছেন তাদের বয়কটের ডাক উঠেছে।

বিষয়টি নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন ব্যাচেলর পয়েন্ট খ্যাত নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি। কারণ অভিনেতা শিমুল ও জীবন অমির বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেছেন। এছাড়াও শিমুল কাজল আরেফিন অমির সহকারী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। যে কারণে অনেকেই এই অভিনেতাদের পাশাপাশি অমিকেও বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন কাজল আরেফিন অমি। সরাসরি জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপনের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই তার। মঙ্গলবার (১১ জুন) দর্শকদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন নির্মাতা।
যেই চিঠি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার দিয়েছেন অভিনেত্রী মনিরা মিঠু ও অভিনেতা জিয়াউল হক পলাশ। দুজনেই অমির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
অমির স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়ে মনিরা মিঠু লিখেছেন, স্পষ্ট বক্তব্য। আর কিছুই বলার নাই। অন্যদিকে পলাশ অমির স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়ে হাতজোড় ও ভালোবাসার ইমোজি দিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
স্ট্যাটাসে কী লিখেছেন অমি?

অমি লেখেন, মানবতা ও বিবেক এই দুটি বিষয় একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার কাজের মাধ্যমে মানবতা এবং বিবেককে জাগ্রত রাখতে। গত রোজার ঈদের পর থেকে আমরা টানা ১২ দিন হিট ওয়েভের মধ্যে ফিমেল-৪ শুটিং করি। পুরো ইউনিটের সবাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করি, শুধুমাত্র আপনাদেরকে বিনোদন দেওয়ার জন্য।

এই নির্মাতা লেখেন, আমি সবসময় চেষ্টা করি সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলতে। সাধারণ মানুষের জীবনের ছোট-ছোট বিষয় তুলে ধরতে আমার কাজের মাধ্যমে। তারই ধারাবাহিকতায় বানিয়েছিলাম বিদেশ, কিডনি, দই, শেষমেশ। আপনাদের ভালোবাসায় আজকে আমি এখানে। আমি আবেগ আপ্লূত এবং কৃতজ্ঞ আপনাদের প্রতি।

এরপর কোকাকোলার বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে এই নির্মাতা বলেন, একটি বিজ্ঞাপনের সাথে সম্পৃক্ততা থাকে একটি এজেন্সির, কোম্পানি এবং বিজ্ঞাপন নির্মাতা। গতকাল থেকে যে বিজ্ঞাপনের ইস্যুটি নিয়ে আমার দর্শক, আমার পরিবার ও দেশবাসী বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, আমি সবার কাছে পরিষ্কার করতে চাই, উক্ত বিজ্ঞাপনের সাথে আমি কোনভাবেই সম্পৃক্ত নই।

অমি লেখেন, আমি একজন পরিচালক। কোনো অভিনেতা-অভিনেত্রী যখন আমার প্রজেক্টে কাজ করতে আসে আমি শুধুমাত্র তাদের ডিরেকশন দেই। তাদের ব্যাক্তিগত জীবন, তাদের কাজ, তাদের পথ চলা- এর কোন কিছুর সাথেই আমার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। অবশ্যই তারা আমার টিম মেম্বার কিন্তু সেটা শুধুমাত্র যখন তারা আমার কাজ করবে তখন। এর বাইরে তাদের ব্যাক্তিগত জীবন আছে। আপনারা আমার উপর রাগ করছেন, আবেগ আপ্লুত হচ্ছেন। আমি আপনাদের সকল রাগ-অভিমান মাথা পেতে নিচ্ছি। কারণ, বিজ্ঞাপনটির অভিনয়শিল্পী যারা আছেন, তারা আমার সঙ্গে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন।

অভিনয়শিল্পীদের অভিভাবক নন উল্লেখ করে অমি বলেন, আপনারা অনেকেই হয়ত এই অভিনয়শিল্পীদের আমার পরিচালিত কাজের মাধ্যমে চেনেন। কিন্তু আমি শুধুমাত্রই এই অভিনয়শিল্পীদের পরিচালক, তাদের অভিভাবক নই। তারা ব্যক্তিগত জীবনে কি করবে, তা সম্পূর্ণই তাদের নিজস্ব ব্যাপার, আমার সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ নেই। আর আপনারা যারা তাদের উপর অভিমান করে বলছেন, আমাদের এত কষ্টে বানানো ফিমেল-৪ দেখবেন না, অভিমান করে বলছেন- আমরা বয়কট করছি ফিমেল ৪। আপনারা নিশ্চয়ই পরিবারের একজন ভুল করলে সেই পরিবারের অন্য সদস্যদের শাস্তি দিবেন না।
দর্শকদের উদ্দেশে এই নির্মাতা লেখেন, আমরা যারা একসাথে কাজ করি সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে আমি মনে করি। আমাদের পরিবারের কেউ যদি ভুল করে থাকে, সে তার ভুল বুঝতে পারে এবং যদি ক্ষমাপ্রার্থী হয়, অবশ্যই আমরা চাইবো তাকে যেন দেশবাসী এবং সাধারন মানুষ ক্ষমা করে দেয়। আশা করছি আপনারা আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না এবং আমার পরিশ্রমকে বিফলে যেতে দিবেন না।

ফিমেল-৪ নাটক দেখার আহ্বান জানিয়ে পরিচালক লেখেন, সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমার কাজে কোন অভিনয়শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন খুজবেন না, আমি কারো ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাজ করি না। আমি আমার গল্পের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি, যে চরিত্রগুলো আমাদের সমাজের প্রতিচ্ছবি। আমাদের পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ। শুধু মাত্র বড় পরিসরে গল্প বলার জন্যই ফিমেল-৪ ওটিটি প্লার্টফর্মের জন্য বানানো। কারণ ইউটিউবে এত বড় পরিসরে কাজ করা যায় না।