সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা মুজিবুল হক। পুরনো রোগ ডায়াবেটিসের সঙ্গে কয়েকদিন ধরে যোগ হয়েছে জ্বর। হালকা জ্বর থাকায় প্রথম দিকে জ্বরের সাধারণ ওষুধ খেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই জ্বর ভালো হচ্ছিলো না। পরে টেস্ট করালে গত পরশু রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে।
শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে মুজিবুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসেন বড় ছেলে রকনুজ্জামান মিয়া।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে বাবার শরীর খারাপ হয়ে যায়। সিরাজগঞ্জ থেকে এখানে ভর্তি করাতে নিয়ে এসেছি, কিন্তু সিট ফাঁকা পাচ্ছি না। হাসপাতালের লোকজন বলেছে, অপেক্ষা করতে। কিন্তু কখন সিট খালি হবে সেটা বলতে পারছে না।
শুক্রবার রাতে নিজের খালাকে ঢামেকে ভর্তি করান পুরান ঢাকার বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় মোতালেবের খালাকে গতকাল থেকে আইসিইউতে স্থানান্তরের চেষ্টা চলছে। কিন্তু কিছুতেই ব্যবস্থা করতে পারছেন না।
মোতালেব বলেন, খালার অবস্থা ভালো না। গতকাল রাত থেকে চেষ্টা করছি আইসিইউতে নেওয়ার। ওরা বলছে, ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু এখনও পাচ্ছি না। খালার অ্যাজমা আছে, যার জন্য ভয়টা বেশি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭০৫টি সাধারণ শয্যা রয়েছে। সেখানে বর্তমানে ৭২৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। অর্থাৎ শয্যার বাইরে বাড়তি ১৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ২০টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে একটিও খালি নেই।
হাসপাতালের ৭, ৮ ও ৯ তলায় করোনা নিয়ে ভর্তি রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শয্যা ফাঁকা না থাকায় রোগী নিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক স্বজনদের তদবিরের পর মিলেছে শয্যা।
হাসপাতালের ৭ম তলায় কথা হয় সখিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, মায়ের অবস্থা ভালো না। সিট পেতে খুব কষ্ট করতে হয়েছে। তিনদিন ধরে আইসিইউতে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি, কিন্তু ফাঁকা পাচ্ছি না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘যে পরিমাণ আইসিইউ আছে, সেগুলো ফাঁকা থাকার সুযোগ নেই। আজ এখানে রোগী ভর্তি আছে ৭২৪ জন। বিছানা খালি না থাকায় নতুন করে কোনো রোগী নিতে পারছি না। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টা নতুন করোনা রোগী আসে। শয্যা না থাকার পরও কিছু রোগী ভর্তি নিতে হয়। কিছু কিট্রিক্যাল রোগী শেখ হাসিনা বার্নে স্থানান্তর করতে হয়।
সূত্র-ঢাকা পোস্ট।