আগুন লাগা ভবনে রাবারের স্তূপ, সরিয়ে নিচ্ছেন শ্রমিকরা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামবাগের হাজী বাবুল রোডে আগুন লাগা কমিশনার ভবনে কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হতো স্যান্ডেল ও গরুর পায়ের নিচে দেওয়ার রাবার ম্যাট। যার জন্য ভবনের ভেতরে স্তূপ করে রাখা হয়েছিল কাটা ছোট প্লাস্টিক। মেশিনে এসব গলিয়েই বানানো হতো বড় শিট।
সেসব শিট কেটেই পরে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করা হতো। ফলে আগুন নির্বাপণ করতে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের। সময় লেগেছে প্রায় আট ঘণ্টা। কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট। অবস্থা বেগতিক দেখে যুক্ত হয়েছিল নৌবাহিনীর একটি অগ্নিনির্বাপণ টিমও।
ফায়ার সার্ভিস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবনটিতে ছিল না পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। চারতলা ভবনের এ কারখানায় একটি মাত্র সিঁড়ি দিয়েই ভেতরে প্রবেশ ও বের হওয়ার জায়গা ছিল। তাছাড়া সরু সড়ক, পর্যাপ্ত পানি, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা, বহির্গমন সিঁড়ি না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে আশঙ্কা ছিল বড় ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার।
শনিবার (২২ মার্চ) সকালে আগুন নির্বাপণ হওয়ার পর দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সরেজমিনে ভবনের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলায় গোডাউন এবং দ্বিতীয়তলা থেকেই ভারি মেশিন। ফ্লোরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা প্লাস্টিকের ছোট দানা। সেখানে কেমিক্যাল দিয়ে এসব প্লাস্টিক গলিয়ে বড় শিট তৈরির বেশ কয়েকটি মেশিনও রয়েছে। ভবনজুড়ে ধোঁয়া ও প্লাস্টিক পোড়া গন্ধ। তবে এর মধ্যেই এসব প্লাস্টিক সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছেন সেখানকার শ্রমিকরা। ভবনটির দ্বিতীয়-তৃতীয় তলার বেশ কয়েক জায়গায় দেয়ালে করা হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব ছিদ্র ব্যবহার করে ভবনের ভেতরে পানি ছিটিয়েছেন।
আল আমিন নামের এক শ্রমিক বলেন, এটি লৌহজং প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রির কারখানা। এখানে গরুর রাবার ম্যাট তৈরি করা হতো। আসলে তেমন কোনো কিছু পোড়েনি। অল্প জায়গায় আগুন জ্বলেছে। কিন্তু ধোঁয়া বের হয়েছে প্রচুর। এখন আমাদের শ্রমিকরা যেসব প্লাস্টিক ভালো আছে সেগুলো বাইরে বের করে নিয়ে যাচ্ছে। ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি কারখানার মালিকপক্ষ কিংবা ভবন সংশ্লিষ্ট কেউ।ফেন্সের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, সকাল ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নির্বাপণ হতে সময় লেগেছে। কারণ আশপাশে পানির সোর্স ছিল না। অনেক দূরে গাড়ি রেখে এখানে কাজ করতে হয়েছে। বুড়িগঙ্গায় একটি পাম্প বসিয়ে বিশেষ পানিবাহী গাড়ির মাধ্যমে এ পর্যন্ত পানি এনেছি।
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, সরু সড়ক হওয়ায় আধুনিক ল্যাডারবাহী গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। সাধারণ ল্যাডারের সাহায্যে আগুন নেভাতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।