নিজেস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে মকবুল হোসেন ওরফে মুকুল (৪৫) নামে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের এক সদস্য নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের মাহমুদপুর ইউনিয়নের জোগারদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মুকুল সে উপজেলার জোকারদিয়া এলাকার কাবিল মেম্বারের ছেলে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন গণপিটুনির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, উপজেলা জোগারদিয়া এলাকার একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল দীর্ঘদিন ধরে খুন, ডাকাতিসহ নানান অপকর্ম করে আসছে। চক্রটির বিরুদ্ধে স্থানীয় ও বিভিন্ন থানায় ডাকাতি হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার মধ্যরাতে সংঘবদ্ধ একটি ডাকাতদল জোগারদিয়া চকে স্থানীয় এক সেচ পাম্পের ড্রেনের ওপর বসে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। স্থানীয় কিছু লোকজন বাউল গানের আসর শেষে বাড়ি ফিরছিল। এসময় ওই স্থানে ডাকাতদের ফিসফিস শব্দ শোনে আশপাশের লোকজনকে বিষয়টি জানায়।
পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে আশপাশ থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ স্থানীয় লোকজন বের ডাকাতদলকে ঘেরাও দেয়। ৭/৮ জন ডাকাত পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ডাকাত মুকুলকে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। পরে সেখানে বিক্ষুব্ধ জনতা মুকুলকে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে সে নিহত হয়।
খবর পেয়ে থানার ওসি এনায়েত হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
ওই এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন জানান, শীতের এই রাত্রিতে সন্ধ্যা পেরোলেই এলাকায় ডাকাতদল বিভিন্ন বাসাবাড়ি, সড়কে হানা দিয়ে মানুষের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। বাধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে পাহারা দিয়েও গ্রামবাসীর জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারছে না।
এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ডাকাতি করতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে বিল্লাল হোসেন নামে আরেক ডাকাতকে আটক করে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। তারপরও ডাকাতদের ডাকাতির করা বন্ধ হয়নি।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। নিহত মুকুল আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তার বিরুদ্ধে আড়াইহাজারসহ বিভিন্ন থানায় খুন ডাকাতিসহ বেশ কিছু মামলা রয়েছে। তবে মামলা সঠিক সংখ্যাটি এই থানার রেকর্ড দেখে বলতে হবে।