আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে কঠোর হাতে দমন করার হুঁশিয়ারি

শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ৪:১৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপি আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে কঠোর হাতে দমন করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন চালান। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা করবেন, মানুষের রুটি-রোজগারে বাধা দেবেন, হরতাল অবরোধের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করবেন, এটা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এসব ব্যাপারে কোনও ছাড় নেই। অনেক ভোগান্তি এ দেশে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। আর এসব অপকর্ম করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। কঠোরভাবে দমন করবো, এটাই সিদ্ধান্ত আমাদের। আপনারা যত আন্দোলন করুন, আমাদের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।

২৮ অক্টোবর এদেশে আবার পাঁচ বছর পরে আসবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তখন আন্দোলন করবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন করার চেষ্টা করবেন। আপাতত আন্দোলনে জনগণ দূরে থাক আপনাদের নেতাকর্মীরাও সাড়া দেবে না। জনগণ যে আন্দোলনে নেই সেটা কিসের আন্দোলন। হতাশ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরাও আসবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে এখন বিএনপি হচ্ছে ডামি দল। আর কোনও ডামি দলের দরকার নেই। ওরা ডামি হয়ে গেছে। শোকে পাথর হয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের ঘুম নেই। সব আশা হারিয়ে ফেলেছে, সব হতাশায়। ওরা আন্দোলন করবে? সারা বাংলাদেশে উত্তাল আন্দোলন হবে, জনতার ঢল নামবে, এসব শুনে ঘোড়াও হাসে। এরা নিজেদেরকে নিজেরাই ভুয়া করে ফেলেছে। বিএনপির এই মুহূর্তে কোনও আশা নেই। নিষেধাজ্ঞাও নেই, ভিসানীতিও নেই, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আশায় আশায় দিন চলে যায়, রাত পোহায়, এ হলো বিএনপি।

তিনি বলেন, নির্বাচন না করে বিএনপি যে ভুল করেছে ‘অচিরেই’ তা টের পাবে। তাদের এখন কালো পতাকা মিছিল, এটা হচ্ছে শোক পালনের কর্মসূচি। কালো পতাকা শোকের চিহ্ন, তাহলে তারা নিজেরাই জাতিকে বলে দিচ্ছে আমরা (বিএনপি) পরাজয় বরণ করেছি। সেই জন্য আমরা আজ শোকের কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছি।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হয়েছেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন তারা আইনগতভাবে মোকাবিলা করুক। অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত নয়, আইনি প্রক্রিয়ায় বের হয়ে যাবে। কোন দেশে অপরাধ করে শাস্তি হবে না? আমেরিকার কথায় আমরা ছেড়ে দেবো? এটা কোনও কথা। তাহলে ট্রাম্পের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিচার কেন হচ্ছে? ৯১টি অভিযোগে ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে আমেরিকার আদালতে। যে দেশের প্রেসিডেন্ট আজ শাস্তি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্টের আদালতে দাঁড়ানোও শাস্তি। সেই দেশ আমাদেরকে কীভাবে বলে অপরাধীদের ছেড়ে দিতে হবে। ২৫ হাজার না কত হাজার। আমাদের জেলে এত লোক নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন অপরাধে অভিযুক্ত ১১ থেকে ১২ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী জেলে আছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘকে দিয়েও তারা বলাচ্ছে ২৫ হাজার জেলে আছে। লবিং ভালোই করে। লবিংয়ের ওস্তাদ এ দল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারচুপির অভিযোগ তোলার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আমাদেরকে সুষ্ঠু নির্বাচনের উপদেশ দেয়। সুষ্ঠু নির্বাচন আগে নিজেরা করুন, তারপর উপদেশ।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও উপকমিটির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ।