আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে ভয় পাবেন না, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিরোধী দলগুলোর সাম্প্রতিক আন্দোলন দেখে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘ভয়’ না পাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘একটু আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে ভয় পাবেন না, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। জনগণ যতক্ষণ আমাদের সঙ্গে আছে…। যারা আন্দোলন করতে চায়, জ্বালাও-পোড়াও করতে চায়… জ্বালাও-পোড়াও আমরা সহ্য করবো না, সেটা কখনওই মেনে নেওয়া যাবে না। তবে আন্দোলন বা সংগ্রাম যাই করুক, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কখনও কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না।’

সোমবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের দুটি প্রতিষ্ঠান ও ২৮ কর্মকর্তার হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখবেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের সমর্থন করেনি, তাদের মনের বৈরিতা এখনও কেটে যায়নি। কিন্তু সেটা অতিক্রম করেই কিন্তু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। সেজন্য এই মুখ গোমড়া করে থাকা আমি দেখতে চাই না, সবাইকে হাসিখুসি দেখতে চাই। যে কেনো সমস্যা আসবে, সেটা মোকাবিলা করার মতো মনোবল দরকার হয়, শক্তি দরকার হয়। সেই শক্তি নিয়ে চললে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, এটাই আমি বিশ্বাস করি।’
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। স্বাস্থ্যসেবা সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। শতভাগ মানুষের ঘর বাড়ি থাকবে। কেউ পিছিয়ে থাকবে না। উন্নতি হবে সবার। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আমাদের কাজের ছাপ রাখছি। আগে যে হাহাকার ছিল, এখন কিন্তু সেটি নেই। আগে মিটিং করতে গেলে দেখতাম, ছেঁড়া কাপড়। এখন সেটি দেখি না।’

শেখ হাসিনা বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়েও ঢাকায় যতটা হাহাকার, গ্রামেগঞ্জে কিন্তু সেটি নেই। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা। আমরা পরিকল্পনা করে দিয়েছি, এখন ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের পালা।

সরকার প্রধান বলেন, পুরস্কার পাওয়ার পর কারো মধ্যে হাসিখুশি দেখছি না। সবার মধ্যে মন মরা, মন মরা ভাব, কেনো? সবাইকে হাসি খুশি থাকতে হবে। যারা পুরস্কার পেয়েছে, অভিনন্দন। যারা পায়নি, ভবিষ্যতে পাবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড চাপ আমাদের না শুধু, সারা বিশ্বব্যাপী। উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু আমরা করোনা মোকাবিলা করে বিশ্বে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছি। অর্থনৈতিক চাপ আছে, কিন্তু অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রেখেছি। এর পেছনে যারা কাজ করেছে, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব বড় কথা না। আমি মনে করি, জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। সেটাই করে যাচ্ছি। সব ধরনের সেবা কীভাবে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করছি। কেউ ভালো কাজ করলে পুরস্কার দেওয়া, বিদেশ থেকে কর্মকর্তাদের ট্রেনিং করিয়ে নিয়ে আসা, এগুলো জাতির পিতা শুরু করেছেন। আমরা সেটা অব্যাহত রেখেছি।
সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদরে করা কমিউনিটি ক্লিনিক বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ মানুষ এখান থেকে সেবা নিয়ে নাকি আমাকে ভোট দেবে। মানুষের কথা তারা চিন্তা করেনি। তাদের চিন্তা ছিল ভোটের। এটার ফলও পেয়েছে। ২০০৮ এর নির্বাচনে মাত্র ২৯টা সিট পেয়েছে তারা। আমরা সরকার গঠন করি।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।