আবারও মূল্য বেড়েছে এলাচের। গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে হঠাৎ করে এলাচের মূল্য কেজিপ্রতি ৬০০ টাকা বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। আজ আবারও প্রতি কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ২০০ টাকা।
মসলার পাইকাররা জানান, ভারতের কেরালায় ২০১৮ সালে বন্যা হয়েছে। এছাড়া এ বছরের খরায় এলাচের উৎপাদন কম হয়। ভারতে সম্প্রতি ঝড়ে এলাচসহ প্রচুর ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে এলাচের বড় রফতানিকারক দেশ গুয়েতেমালার ওপর চাপ পড়েছে। যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে এই পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে। গত মাসে দেশের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি এলাচের মূল্য ছিল ২৪০০ টাকা। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে এলাচের কেজিতে বেড়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ভারতের সম্প্রতি নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে মসলার বাজারে। এছাড়া বিশ্ববাজারে এলাচের সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে দেশের বাজারে এলাচের মূল্য বেড়ে গেছে। বিশ্ববাজারে এলাচের এখন সংকট। ভারতেও এলাচের মূল্য বেড়ে গেছে।’
ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর এমনকি মার্চ পর্যন্ত এলাচের মূল্য এমনিতেই চড়া থাকে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, শীতকালে বিয়ে, মেজবান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খাবারের অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন।
এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ নভেম্বর প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সেই এলাচ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৮০০ টাকা।
টিসিবির তথ্য বলছে, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর প্রতি কেজি এলাচের মূল্য ছিল ১৫৫০ থেকে ২০০০ টাকা। এক বছরে এই পণ্যটির মূল্য বেড়েছে ৯১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা জানান, খুচরা বাজারে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা বাড়লেও পাইকারি বাজারে এলাচের কেজিতে মূল্য বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
বাংলাদেশ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির তথ্যানুযায়ী, বছরে দেশে ৩ হাজার টন এলাচের চাহিদা রয়েছে। তবে, মোট চাহিদার প্রায় অর্ধেকই বিক্রি হয় কোরবানির ঈদ ঘিরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাস পর্যন্ত এক বছরে এলাচ আমদানি হয়েছে ৬৮৭৮ টন। যার কেজিপ্রতি মূল্য পড়েছে ৫৭৮ টাকা।