বিনোদন ডেস্ক :
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির এক দিনের মাথায় জামিন পেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা পরীমণি। এদিন আদালতে আত্মসমর্পণ জামিন চাইলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন।
জামিন পাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন পরী। যেখানে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আইনের ওপর শ্রদ্ধশীল ছিলাম, এখনও আছি। আইনের ওপর বিশ্বাস ছিল। আর একদম শুরু থেকেই আপনারা সবাই যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছেন, যতটা পেরেশানিতে ছিলেন—তা দেখে আমার নিজের যত দুঃখ ছিল, সেটা ঘুচে গেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।’
পাল্টা মামলা হওয়া প্রসঙ্গে পরী বলেন, এটা তো পরিষ্কার। আমি একটি মামলা করলাম তার আড়াই বছর পর পালটা মামলা করা হলো শুধুমাত্র আমাকে দমানোর জন্য। মামলাটা বিচারাধীন। আমি আশা করি, আমি ন্যয়বিচার পাব। এখান থেকে আমি আশাহত হতে চাই না। সত্যের জয় হবে।
নিজের কাজ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘কোনও গোষ্ঠী যদি আমার কাজে বাধা তৈরি করে তাহলে বলার কিছু নেই। তবে আমি তখনও আবার বলব। কী করব বলুন, কখনোই অন্যায় দেখে চুপ থাকিনি। আগামীতেও থাকব না। আমার গায়ে লাগলে কাউকে ছেড়ে কথা বলব না। বাকিদের মতো চুপ করে থাকতে পারি না।’
এদিন সকাল ১০টার দিকে পরীমণি আদালতে আসেন। সকাল ১০টা ১৭ মিনিটের দিকে আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়। এসময় এজলাসের পেছনে একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন পরীমণি। তাকে আসামিদের ডকে যেতে বলেন আদালত।
তিনি বলেন, গতকাল মামলাটি চার্জশুনানির জন্য ছিলো। পরীমণি অসুস্থ থাকায় আদালতে আসতে পারেননি। চার্জগঠন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আজ আত্মসমর্পণ করেছেন। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
এরপর বিচারক বলেন, আশা করছি, সবাই কোর্টের ডিগনিটি রক্ষা করবেন। কোর্টকে বিতর্কিত করবেন না। মামলাটা জামিনযোগ্য ধারার। আসলেই জামিন পাবেন বিষয়টা এমন নয়। বিচারাধীন বিষয়ে এভাবে আগে কথা বলাটা কতটুকু যৌক্তিক?
পরীমণির আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি কোর্ট অফিসার। এ বিষয়গুলো ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবেন। পরে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিনের আদেশ দেন।
গত বছর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ১৮ এপ্রিল ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত পিবিআইয়ের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন আদালত। একইসঙ্গে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। এরপর তারা ২৫ জুন ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন পান।