আরাফাত দিবসের রোজা কয়টি?

প্রকাশিত: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৪

ইসলামিক ডেস্ক:

আরাফা আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে চেনা, জানা। দীর্ঘদিন বিচ্ছেদের পর হযরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) পরস্পরের দেখা হয়- আরাফাতের দিন। এটি তওবা করার দিবস, ক্ষমা প্রার্থনা করার দিবস। আরাফাতের ময়দান বিচার দিবসের হাশরের ময়দানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়; যেখানে সমগ্র মানবজাতি একত্রিত হবে সুবিস্তৃত এক ময়দানে। এ দিবসে মহান আল্লাহ তার ক্ষমা, রহমত ও দয়া উপস্থাপন করেন।

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ পবিত্র আরাফাতের দিন। এবারের হজে সৌদি আরবে অবস্থানকারীদের জন্য সেই দিনটি হলো ১৫ জুন, শনিবার। আর সৌদি আরবের বাইরের দেশে অবস্থানকারীরা সঠিক মতানুযায়ী জিলহজের চাঁদ ওঠা সাপেক্ষে নিজ দেশের সঙ্গে মিলিয়ে ৯ জিলহজ রোজা রাখবেন। বাংলাদেশে সেই দিনটি হলো রোববার। অর্থাৎ শনিবার শেষরাতে সেহরি খেয়ে রোববার রোজা রাখলে আরাফাতের দিনে রোজা রাখার বিশেষ সওয়াব পাওয়া যাবে- ইনশাআল্লাহ।
আরাফার দিনের রোজা মূলত একটি। হাদিসে আরাফাতের দিনের একটি রোজার কথাই এসেছে। যারা বলছেন, একদিন রোজা রাখলে হবে না, তাদের কথা সঠিক নয়। আরাফাতের দিনে একটি রোজা রাখলে বান্দার দুই বছরের গুনাহ মাফ হয় বলে হাদিসে এসেছে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আরাফাতের দিনের রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি যে, তিনি আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম: ১১৬২)
অন্য হাদিসে এসেছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী বর্ণনা করেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৯ জিলহজ তারিখে রোজা রাখতেন। (আবু দাউদ: ২৪৩৭)
তবে উত্তম হচ্ছে- যারা জিলহজ মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখেন। এতে আরাফাত দিবসের রোজা তো পাওয়া যাবেই, একইসঙ্গে তারা অনেক সওয়াব ও ফজিলত লাভ করবেন। জিলহজের প্রথম দশদিন মহান আল্লাহর কাছে খুব বেশি প্রিয়। এ সময়ে সামান্য আমলে অতি সহজে মহান আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়া যায়। মহান আল্লাহ সুরা ফজরের ২ নম্বর আয়াতে দশ রাতের কসম করে বলেন,
الۡفَجۡر- وَ لَیَالٍ عَشۡرٍ উচ্চারণ: ওয়াল ফাজর ওয়ালায়ালিন আশর অর্থ: শপথ ফজরের,শপথ দশ রাতের।
অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, এখানে দশ রাত বলতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাত উদ্দেশ্য। আর স্বয়ং আল্লাহ যখন কোনো সময়ের কসম খান, সেটার গুরুত্ব যে কতখানি, তার ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের নেক আমল আল্লাহর নিকট যত প্রিয়, আর কোনো দিনের আমল তত প্রিয় নয়। সাহাবিরা প্রশ্ন করলেন, আল্লাহর পথে জিহাদও কি এর চেয়ে প্রিয় নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর পথে জিহাদও এ দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে প্রিয়তর নয়। তবে ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে নিজের প্রাণ ও সম্পদ নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে যান এবং কোনো কিছু নিয়ে আর ফিরে আসেন না। (বুখারি: ৯৬৯)