
ডেস্ক রিপোর্ট:
এক ফোঁটা পানিও পাকিস্তানে যাবে না: ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী
সিন্ধু দিয়ে হয় পানি আসবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত: বিলাওয়াল ভুট্টো
নিরপেক্ষ তদন্তে সহায়তায় রাজি পাকিস্তান
মধ্যস্থতার প্রস্তাব ইরানের
দুই দেশ নিজেরাই সমস্যার সমাধান করবে, আশা ট্রাম্পের
কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা চলছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতেও টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দুই দেশের সীমান্তে গুলি চলেছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রে সিন্ধু নদের পানি ইস্যু।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, সিন্ধু নদ দিয়ে যাতে পাকিস্তানে এক ফোঁটা পানিও না যায়, তা নিশ্চিতে কাজ চলছে। অন্যদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো হুমকি দিয়ে বলেছেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি আসবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত। দুই দেশের সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যে পহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তান একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, দুই দেশই চলমান সংকটের সমাধান করবে।
প্রসঙ্গত, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় প্রতিশোধের আগুনে ফুঁসছে ভারত। দেশটি ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। সিন্ধু অববাহিকার ছয়টি নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু অববাহিকার রাভি (ইরাবতী), বিয়াস (বিপাশা) ও সুতলেজ (শতদ্রু) নদীর পানি ভারতের জন্য বরাদ্দ। আর সিন্ধু, ঝেলাম ও চেনাব নদীর ৮০ শতাংশ পানি পায় পাকিস্তান।
জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচের জন্য পাকিস্তান এই নদীব্যবস্থার পানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তি স্থগিত করা হলেও পাকিস্তানে পানিপ্রবাহে তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব পড়বে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, পানি সংরক্ষণের যথেষ্ট সক্ষমতা নেই ভারতের। তবে ভারতের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে পাকিস্তানের কৃষিব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিতে পারে। পাকিস্তান কৃষি গবেষণার হেড অব প্রোডা ক্ট ঘশারিব শাওকত সিন্ধু চুক্তিকে দেশের কৃষি খাতের মেরুদণ্ড বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত আমাদের কৃষির ভবিষ্যৎকে টালমাটাল করে তুলবে। ফসলের ফলন কমে যেতে পারে। খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। খাদ্যের দাম বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
এক ফোঁটা পানিও পাকিস্তানে যাবে না: ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী
পাকিস্তান যাতে সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও না পায়, তার জন্য আরো কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এজন্য ভারত সরকারের ‘তিনটি’ পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী দি তার পাতিল। তিনি বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কোনো একটি পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত শুক্রনবার নিজ বাসভবনে বৈঠক করেন। অনেকের সঙ্গেই সেখানে ছিলেন পাতিলও। সেখানে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখা নিয়ে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর নিজের এক্স হ্যান্ডেলেও পোস্ট করে মন্ত্রী পাতিল লেখেন, ‘সিন্ধুর পানি চুক্তির বিষয়ে মোদি সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, যা আইনসংগত এবং জাতীয় স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করব যে, সিন্ধু নদের এ এক ফোটা পানিও যাতে পাকিস্তানে প্রবাহিত না হয়।’
সিন্ধু দিয়ে হয় পানি আসবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত: বিলাওয়াল ভুট্টো
ভারত সরকার সিন্তু পানি চুক্তি স্থগিত করার পর পাকিস্তানের সরকার বলেছে, সিন্ধুর পানি প্রত্যাহারের যে কোনো পদক্ষেপ ‘অ্যাক্ট অব ওয়ার’ বলে বিবেচিত হবে এবং এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন উত্তেজনার মধ্যে ভারতকে হুমকি দিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেছেন, সিল্ক দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে। শুক্রবার এক জনসভায় বিলওয়াদ ভুট্টো বলেন, সিন্ধু আমাদের আছে, আমাদের থাকবে, হয় এটি দিয়ে আমাদের পানির স্রোত বইবে নয়তো তাদের (ভারতীয়) রক্ত বইবে। তিনি বলেন, পাকিস্তান বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেউই সিন্ধু নদের পানি ভিন্নদিকে সরানোর প্রচেষ্টা সহ্য করবে না। এদিকে বিলাওয়াল ভুট্টোকে বোকা সম্বোধন করে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বলেছেন, পহেলগামে হামলার জন্য পাকিস্তানকে চরম মূল্য দিতে হবে। এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দুনিয়া নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে অবহিত না করেই নদীর পানি বেশি পরিমাণে ছাড়ছে ভারত। এ কারণেহু হু করে ঝিলাম নদীর পানি বেড়ে গেছে। বন্যার বিষয়ে সতর্ক করতে মসজিদ থেকে স্থানীয়দের মাইকিং করতে শোনা গেছে। এতে করে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
দ্বিতীয় দিনের মতো গুলিবিনিময়
পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে দ্বিতীয় দিনের মতো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখার একাধিক পয়েন্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চৌকি থেকে ‘উসকানিমূলক’ হালকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়া। জবাবে পালটা গুলি ছোড়ে ভারতীয় বাহিনী। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেও পাকিস্তানি সেনারা বিচ্ছিন্নভাবে গুলি চালিয়েছিল। তবে ভারতীয় পক্ষ থেকে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।
কাশ্মীর পুলিশের বরাতে জানা গেছে, ২২ এপ্রিলের ঐ হামলায় তিন জন সন্দেহভাজনের নাম চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই জন পাকিস্তানি নাগরিক। তবে পাকিস্তান এই হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এদিকে সন্দেহভাজনদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। কেউ আটক না হলেও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন গত দুই দিনে তিন সন্দেহভাজনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যের কোথাও কোনো পাকিস্তানি নাগরিক বসবাস করছেন কি না-খতিয়ে দেখতে ভারতের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কোনো রাজ্যে পাকিস্তানির সন্ধান পাওয়ামাত্র তাকে পত্রপাঠ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে পহেলগামে হামলার দায় সেখানকার স্বল্প পরিচিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) স্বীকার করেছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই গোষ্ঠীট গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ভারত এই বিষয়ে ভূয়া দাবি ছড়িয়েছে।
নিরপেক্ষ তদন্তে সহায়তায় রাজি পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাম হামলার নিরপেক্ষ তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে তার দেশ। অ্যাবোটাবাদের কাকুলে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির পাসিং আউট প্যারেডে শাহবাজ শরিফ রিফ বলেন, পূর্বদিকের প্রতিবেশী (ভারত) তদন্ত ও যাচাইযোগ্য প্রমাল ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। পহেলগাম ট্রট্র্যাজেডির পর একের পর এক অভিযোগের ধারা বন্ধ হওয়া উচিত। একটি দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে পাকিস্তান একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী সীমন্ত রক্ষা করতে প্রস্তুত, তবে এ নিয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকা উচিত নয়। শান্তি আমাদের কাম্য, কিন্তু এটাকে আমাদের দুর্বলতা মনে করা উচিত নয়। পাকিস্তান যে কোনো মূল্যে তার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপজ রক্ষা করবে। এদিকে পহেলগামে হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ আরো বলেন, ভারত এ হামলাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে আইডব্লিউটি চুক্তি স্থগিত করার চেষ্টা করছে। এছাড়া নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চায় তারা। তার ভাষায়, ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই, কোনো তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমরা এ যুদ্ধকে আরো উসকে দিতে চাই না। কারণ, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এ অঞ্চলের জন্য তা ত তা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ভারত এক দশক ধরে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অজুহাত তৈরি করছিল। এখন তারা এ ঘটনাকে সেই অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে স্কাই নিউজকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ভারত পূর্ণমাত্রায় হামলা চালালে অবশ্যই এর জবাবে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ হবে। তাই এই অঞ্চলে পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাতের আশঙ্কায় বিশ্বের চিন্তিত হওয়া উচিত।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব ইরান ও সৌদি আরবের
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী, যাদের সঙ্গে সম্পর্ক শতাব্দীপ্রাচীন সাংস্কৃতিক ও সভ্যতার বন্ধনে গাঁথা। অন্যান্য প্রতিবেশীর মতো, তাদের প্রতিও আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকে। এই কঠিন সময়ে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে তেহরান মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। এই মন্তব্যের সঙ্গেই তিনি জুড়ে দিয়েছেন ‘বনি আদম’ কবিতার কয়েকটি চরণ, যেখানে বলা হচ্ছে, মানুষ এক অখণ্ড সত্তার অংশ, সৃষ্টিতে তাদের মূল এক ও অভিন্ন। যদি একজন ব্যথিত হয়, তবে অন্যরাও স্বস্তিতে থাকতে পারে না। এয়োদশ শতাব্দীর বিখ্যাত এই ফার্সি কবিতার লেখক ইরানি কবি সাদি শিরাজি।
অন্যদিকে সৌদি আরবও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতাকারী হতে প্রস্তাব দিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স জয়সাল বিন ফারহান এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোনও করেছেন।
দুই দেশ সমাধান করবে আশা ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর সম্পর্কর সমাধান তারা নিজেরাই বের করবে। পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে রোম যাওয়ার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে এ মন্তব্য করেন। তিনি সীমান্ত নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে থাকা দীর্ঘদিনের বিরোধের কথা উল্লেখ করে বলেন, উভয় দেশের নেতাদেরকেউ তিনি ভালো করে চেনেন। একটা না একটা উপায় তারা বের করে নেবে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে, এটা সবসময়ই ছিল। দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে তার কথা হয়েছে কি-না, এ প্রশ্নের কোনো জবাব। দেননি তিনি।
পহেলগামে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদ বলেছে, এই হামলায় জড়িত ও মদতদাতাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করায় খরচ বাড়ছে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর
পাকিস্তান আক্রোশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগোর মতো ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো এখন তাদের অন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট ঘুরপথে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে তাদের জ্বালানি বাবদ বেশি খরচ হবে এবং ভ্রমণের সময়ও বেড়ে যাবে। ভারতের বেসরকারি বিমান চলাচলসংক্রান্ত এক নির্বাহী বলেছেন, নয়াদিল্লি থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে করে গন্তব্যে পৌছাতে গড়ে এক ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে। এতে জ্বালানি খরচ যেমন বেশি হবে, তেমনি মাল পরিবহন কমাতে হবে। সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা
আলোচনার কেন্দ্রে সিন্ধুর পানি
এক ফোঁটা পানিও পাকিস্তানে যাবে না: ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী
সিন্ধু দিয়ে হয় পানি আসবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত: বিলাওয়াল ভুট্টো
নিরপেক্ষ তদন্তে সহায়তায় রাজি পাকিস্তান
মধ্যস্থতার প্রস্তাব ইরানের
দুই দেশ নিজেরাই সমস্যার সমাধান করবে, আশা ট্রাম্পের
কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা চলছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতেও টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দুই দেশের সীমান্তে গুলি চলেছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রে সিন্ধু নদের পানি ইস্যু।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, সিন্ধু নদ দিয়ে যাতে পাকিস্তানে এক ফোঁটা পানিও না যায়, তা নিশ্চিতে কাজ চলছে। অন্যদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো হুমকি দিয়ে বলেছেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি আসবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত। দুই দেশের সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যে পহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তান একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, দুই দেশই চলমান সংকটের সমাধান করবে।
প্রসঙ্গত, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় প্রতিশোধের আগুনে ফুঁসছে ভারত। দেশটি ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। সিন্ধু অববাহিকার ছয়টি নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু অববাহিকার রাভি (ইরাবতী), বিয়াস (বিপাশা) ও সুতলেজ (শতদ্রু) নদীর পানি ভারতের জন্য বরাদ্দ। আর সিন্ধু, ঝেলাম ও চেনাব নদীর ৮০ শতাংশ পানি পায় পাকিস্তান।
জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচের জন্য পাকিস্তান এই নদীব্যবস্থার পানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তি স্থগিত করা হলেও পাকিস্তানে পানিপ্রবাহে তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব পড়বে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, পানি সংরক্ষণের যথেষ্ট সক্ষমতা নেই ভারতের। তবে ভারতের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে পাকিস্তানের কৃষিব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিতে পারে। পাকিস্তান কৃষি গবেষণার হেড অব প্রোডা ক্ট ঘশারিব শাওকত সিন্ধু চুক্তিকে দেশের কৃষি খাতের মেরুদণ্ড বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত আমাদের কৃষির ভবিষ্যৎকে টালমাটাল করে তুলবে। ফসলের ফলন কমে যেতে পারে। খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। খাদ্যের দাম বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
এক ফোঁটা পানিও পাকিস্তানে যাবে না: ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী
পাকিস্তান যাতে সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও না পায়, তার জন্য আরো কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এজন্য ভারত সরকারের ‘তিনটি’ পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী দি তার পাতিল। তিনি বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কোনো একটি পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত শুক্রনবার নিজ বাসভবনে বৈঠক করেন। অনেকের সঙ্গেই সেখানে ছিলেন পাতিলও। সেখানে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখা নিয়ে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর নিজের এক্স হ্যান্ডেলেও পোস্ট করে মন্ত্রী পাতিল লেখেন, ‘সিন্ধুর পানি চুক্তির বিষয়ে মোদি সরকারের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, যা আইনসংগত এবং জাতীয় স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করব যে, সিন্ধু নদের এ এক ফোটা পানিও যাতে পাকিস্তানে প্রবাহিত না হয়।’
সিন্ধু দিয়ে হয় পানি আসবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত: বিলাওয়াল ভুট্টো
ভারত সরকার সিন্তু পানি চুক্তি স্থগিত করার পর পাকিস্তানের সরকার বলেছে, সিন্ধুর পানি প্রত্যাহারের যে কোনো পদক্ষেপ ‘অ্যাক্ট অব ওয়ার’ বলে বিবেচিত হবে এবং এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন উত্তেজনার মধ্যে ভারতকে হুমকি দিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেছেন, সিল্ক দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে। শুক্রবার এক জনসভায় বিলওয়াদ ভুট্টো বলেন, সিন্ধু আমাদের আছে, আমাদের থাকবে, হয় এটি দিয়ে আমাদের পানির স্রোত বইবে নয়তো তাদের (ভারতীয়) রক্ত বইবে। তিনি বলেন, পাকিস্তান বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেউই সিন্ধু নদের পানি ভিন্নদিকে সরানোর প্রচেষ্টা সহ্য করবে না। এদিকে বিলাওয়াল ভুট্টোকে বোকা সম্বোধন করে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বলেছেন, পহেলগামে হামলার জন্য পাকিস্তানকে চরম মূল্য দিতে হবে। এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দুনিয়া নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে অবহিত না করেই নদীর পানি বেশি পরিমাণে ছাড়ছে ভারত। এ কারণেহু হু করে ঝিলাম নদীর পানি বেড়ে গেছে। বন্যার বিষয়ে সতর্ক করতে মসজিদ থেকে স্থানীয়দের মাইকিং করতে শোনা গেছে। এতে করে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
দ্বিতীয় দিনের মতো গুলিবিনিময়
পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে দ্বিতীয় দিনের মতো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখার একাধিক পয়েন্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চৌকি থেকে ‘উসকানিমূলক’ হালকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়া। জবাবে পালটা গুলি ছোড়ে ভারতীয় বাহিনী। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেও পাকিস্তানি সেনারা বিচ্ছিন্নভাবে গুলি চালিয়েছিল। তবে ভারতীয় পক্ষ থেকে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি।
কাশ্মীর পুলিশের বরাতে জানা গেছে, ২২ এপ্রিলের ঐ হামলায় তিন জন সন্দেহভাজনের নাম চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই জন পাকিস্তানি নাগরিক। তবে পাকিস্তান এই হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এদিকে সন্দেহভাজনদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। কেউ আটক না হলেও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন গত দুই দিনে তিন সন্দেহভাজনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যের কোথাও কোনো পাকিস্তানি নাগরিক বসবাস করছেন কি না-খতিয়ে দেখতে ভারতের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কোনো রাজ্যে পাকিস্তানির সন্ধান পাওয়ামাত্র তাকে পত্রপাঠ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে পহেলগামে হামলার দায় সেখানকার স্বল্প পরিচিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) স্বীকার করেছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই গোষ্ঠীট গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ভারত এই বিষয়ে ভূয়া দাবি ছড়িয়েছে।
নিরপেক্ষ তদন্তে সহায়তায় রাজি পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাম হামলার নিরপেক্ষ তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে তার দেশ। অ্যাবোটাবাদের কাকুলে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির পাসিং আউট প্যারেডে শাহবাজ শরিফ রিফ বলেন, পূর্বদিকের প্রতিবেশী (ভারত) তদন্ত ও যাচাইযোগ্য প্রমাল ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। পহেলগাম ট্রট্র্যাজেডির পর একের পর এক অভিযোগের ধারা বন্ধ হওয়া উচিত। একটি দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে পাকিস্তান একটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী সীমন্ত রক্ষা করতে প্রস্তুত, তবে এ নিয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকা উচিত নয়। শান্তি আমাদের কাম্য, কিন্তু এটাকে আমাদের দুর্বলতা মনে করা উচিত নয়। পাকিস্তান যে কোনো মূল্যে তার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপজ রক্ষা করবে। এদিকে পহেলগামে হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ আরো বলেন, ভারত এ হামলাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে আইডব্লিউটি চুক্তি স্থগিত করার চেষ্টা করছে। এছাড়া নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চায় তারা। তার ভাষায়, ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই, কোনো তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমরা এ যুদ্ধকে আরো উসকে দিতে চাই না। কারণ, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এ অঞ্চলের জন্য তা ত তা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ভারত এক দশক ধরে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অজুহাত তৈরি করছিল। এখন তারা এ ঘটনাকে সেই অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে স্কাই নিউজকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ভারত পূর্ণমাত্রায় হামলা চালালে অবশ্যই এর জবাবে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ হবে। তাই এই অঞ্চলে পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাতের আশঙ্কায় বিশ্বের চিন্তিত হওয়া উচিত।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব ইরান ও সৌদি আরবের
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী, যাদের সঙ্গে সম্পর্ক শতাব্দীপ্রাচীন সাংস্কৃতিক ও সভ্যতার বন্ধনে গাঁথা। অন্যান্য প্রতিবেশীর মতো, তাদের প্রতিও আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকে। এই কঠিন সময়ে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে তেহরান মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। এই মন্তব্যের সঙ্গেই তিনি জুড়ে দিয়েছেন ‘বনি আদম’ কবিতার কয়েকটি চরণ, যেখানে বলা হচ্ছে, মানুষ এক অখণ্ড সত্তার অংশ, সৃষ্টিতে তাদের মূল এক ও অভিন্ন। যদি একজন ব্যথিত হয়, তবে অন্যরাও স্বস্তিতে থাকতে পারে না। এয়োদশ শতাব্দীর বিখ্যাত এই ফার্সি কবিতার লেখক ইরানি কবি সাদি শিরাজি।
অন্যদিকে সৌদি আরবও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতাকারী হতে প্রস্তাব দিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স জয়সাল বিন ফারহান এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোনও করেছেন।
দুই দেশ সমাধান করবে আশা ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকর সম্পর্কর সমাধান তারা নিজেরাই বের করবে। পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে রোম যাওয়ার পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে এ মন্তব্য করেন। তিনি সীমান্ত নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে থাকা দীর্ঘদিনের বিরোধের কথা উল্লেখ করে বলেন, উভয় দেশের নেতাদেরকেউ তিনি ভালো করে চেনেন। একটা না একটা উপায় তারা বের করে নেবে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে, এটা সবসময়ই ছিল। দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে তার কথা হয়েছে কি-না, এ প্রশ্নের কোনো জবাব। দেননি তিনি।
পহেলগামে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদ বলেছে, এই হামলায় জড়িত ও মদতদাতাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করায় খরচ বাড়ছে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর
পাকিস্তান আক্রোশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগোর মতো ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো এখন তাদের অন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট ঘুরপথে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে তাদের জ্বালানি বাবদ বেশি খরচ হবে এবং ভ্রমণের সময়ও বেড়ে যাবে। ভারতের বেসরকারি বিমান চলাচলসংক্রান্ত এক নির্বাহী বলেছেন, নয়াদিল্লি থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে করে গন্তব্যে পৌছাতে গড়ে এক ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে। এতে জ্বালানি খরচ যেমন বেশি হবে, তেমনি মাল পরিবহন কমাতে হবে। সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।