আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ
আশুলিয়ায় একটি সোয়েটার কারখানায় কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। এ সময় হঠাৎ মূল ফটক দিয়ে লাঠি হাতে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল তরুণ ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। তাদের সবার মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। কারখানার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেল সেই ভয়াবহ চিত্র। এ ছাড়া আশপাশে আরো চার-পাঁচটি কারখানায় একই কায়দায় হামলা চালায় তারা।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় উইলিয়ামস সোয়েটার্স লিমিটেড নামে একটি কারখানার সিসিটিভি ফুটেজে এমন চিত্র দেখা যায়। এ ছাড়া বাইরে সড়কের মাঝখানে গাছের ডালপালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। ততক্ষণে ওই যুবকরা পালিয়ে যায়।
কারখানার ফুটেজে দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ উচ্ছৃঙ্খল তরুণ লাঠি হাতে কারখানায় ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষসহ ভেতরে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষও ব্যাপক ভাঙচুর করে। প্রাইভেট কারসহ অফিসের অন্যান্য জিনিসপত্র ভেঙে দেয়।
তারা কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় গেটের বাইরে আরো ১০ থেকে ১২ জন তরুণ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে ছিল। কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক পলাশ দত্ত বলেন, ‘হঠাৎ করে বেশ কয়েকজন যুবক লাঠি হাতে কারখানায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা কারখানা ছুটি দেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। এ ছাড়া আশপাশে কয়েকটি কারখানায়ও হামলায় চালায় তারা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভাঙচুরে কারখানার প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘যারা কারখানায় হামলা চালিয়েছে, তারা শ্রমিক না অন্য কেউ? এটা নিয়েও সন্দেহ আছে। তাদের পোশাক ও বয়স দেখে সেটাই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।’
এদিকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত আট দিন গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়। গত তিন দিন আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার কিছু পোশাক শ্রমিক বিক্ষোভ ও আন্দোলন করে আসছে। মঙ্গলবার সকালেও তারা আন্দোলন করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শিল্প পুলিশসহ র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। দুপুর ১২টার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। যারা অবরোধের নামে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে, পুলিশ তাদের খুঁজে বের করছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গতকাল সোমবার আশুলিয়ার নরসিংহপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের নামে হা-মীম গ্রুপের নেক্সট ক্যালেকশন নামে কারখানায় ঢুকে ভাঙচুর, শ্রমিক, কর্মকর্তাসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করে আন্দোলনকারীরা।