ইবিতে শাহ আজিজুরের নামে হলের নামকরণ, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ১:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২৫

সানজিদা মাহবুবা:

 

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বুধবার (৫ মার্চ) ৪টি আবাসিক হল ও একটি একাডেমিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রশাসন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করে শাহ আজিজুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, শাহ আজিজুর রহমান একজন চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই-৩৬ হল’ করা হয়েছে। শেখ রাসেল হলের নাম ‘শহীদ আনাছ হল’, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম ‘শাহ আজিজুর রহমান হল’, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম ‘উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হল’ এবং ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের নাম ‘ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবন’ করা হয়েছে।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন লেখেন, শাহ আজিজুর রহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেন। যুদ্ধের সময় পাকিস্তান কর্তৃক জাতিসংঘে প্রেরিত প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি জাতিসংঘে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করলেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছেন।

তিনি আরও লেখেন, ঠিক কি কারণে তার নাম আসলো আমার জানা নেই । আরও অনেক মানুষের নাম আসতে পারতো যারা মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীকাল নিয়ে যথেষ্ট ট্রান্সপারেন্ট।

আরেক শিক্ষার্থী রনি আহমেদ বলেন, হলের নাম পরিবর্তন করতে হলে শাহ আজিজুর রহমানের মতো বিতর্কিত মানুষের নামে নাম কেন পরিবর্তন করতে হবে, বুঝলাম না। কাঙাল হরিনাথ আছেন, বাঘা যতিন আছেন, তাদের নামেও তো নামকরণ করা যেত। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ইসলামিক স্কলার প্রয়াত আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের নামটিও বিবেচনায় রাখা যেত। কুষ্টিয়া ও বাঙালির ঐতিহ্য বিবেচনায় এই নামগুলোর গুরুত্ব রাখে তা বলার অবকাশ রাখে না।

এছাড়া আরেক শিক্ষার্থী আশহাদুল ইসলাম বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়াতে স্থাপনের পিছনে শাহ আজিজুর রহমান এর ভূমিকা ছিলো ব্যাপক।।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “শাহ আজিজুর রহমান বাংলাদেশের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশাসনের উচিত ছিল নিরপেক্ষ এবং সর্বজনস্বীকৃত কারো নামে হলের নামকরণ করা। ইবি প্রশাসনের সিদ্ধান্তগুলো বরাবরই বিতর্কিত।”

এদিকে, এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সংসদ। বুধবার (৫ মার্চ) এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক এই নিন্দা জানান। একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মাওলানা ভাসানীর নামে নামকরণের আহ্বান জানান তারা।