ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চলা ‘নো ওয়ার্ক, নো ক্লাস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন দল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে পৃথকভাবে এসব বিক্ষোভ সমাবেশ করে শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট কলেজ, ইসলামি যুব মজলিস, গণশক্তি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফতে যুব মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।

শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট কলেজ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ছাত্র-শিক্ষকরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ফিলিস্তিনে শান্তি মিশনে পাঠানোর দাবি জানান। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে সামরিক প্রশিক্ষক পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে তারা আরও বলেন, ইসরায়েলকে যে সব রাষ্ট্র সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করছে, সে সব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে হবে। তাদের সব ধরনের পণ্য বয়কট করতে হবে।

এ সময় তারা ইসরায়েল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টাদের বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানানোর এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইসরায়েলের যে-সব প্রতিষ্ঠান রয়েছে অনতিবিলম্বে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান।

সমাবেশ উপস্থিত শিক্ষকরা বলেন, ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা সবাই যেন প্রতিবাদী হই। আমাদের সমগ্র মুসলিম উম্মা যেন জাগ্রত হই। সবাই ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াই।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা, ছাত্রসেনার কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনের নেতারা বলেন, আমরা চাই জাতিসংঘ আমাদের মুসলিম ভাই ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকতে হবে। নেতানিয়াহুকে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা চাই সবাই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

তারা আরও বলেন, আমরা যখন এখানে উপস্থিত হয়েছি তখন ফিলিস্তিনে হামলা হচ্ছে। আমরা কীভাবে প্রতিবাদ না করে থাকতে পারি। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মুসলিমরা আমাদের দায়িত্বের কাছে হেরে গিয়েছি। আমাদের সবাইকে পথে নামতে হবে। ইসরায়েলের সব পণ্য আমাদের বয়কট করতে হবে।

এছাড়াও বাংলাদেশ খেলাফতে যুব মজলিস, ইসলামি যুব মজলিসের নেতারা সারা বিশ্বের মুসলমানদের একত্রিত হয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার চালানোর তীব্র নিন্দা জানা

গণশক্তি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, মানবতার এই বিপর্যয় থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার জন্য আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ করতে হবে। কারণ, আমরা যদি প্রতিবাদ না করি, তাহলে আমাদের মানবিক মূল্যবোধ প্রকাশ পাবে না। আমি বলতে চাই, এই প্রতিবাদ আমাদের সবার মধ্যে জাগ্রত হোক, সঞ্চারিত হোক। আমরা সবাই মিলে একতাবদ্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ করি। আমরা যদি প্রতিবাদ না করি তাহলে মানবতার এই দুঃসময় কাটানো সম্ভব হবে না।

ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা ইসরায়েলের সমস্ত পণ্য বয়কট করবো। আমরা ইসরায়েলকে একঘরে করে রাখবো। আমরা ইসরায়েলের কোনো পণ্য ব্যবহার করবো না। আমরা ইসরায়েলের এই চরম অবমাননার নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা ইসরাইলের সমস্ত কর্মকাণ্ডের নিন্দা করছি। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য একত্রিত হয়েছি।

ওআইসিকে এই গণহত্যার বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ওআইসি কি করছে আসলে। তারা যদি ফিলিস্তিনের পেছনে দাঁড়িয়ে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এতগুলো মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হতো না। কাজেই ওআইসিকে তাদের কার্যক্রম সুদৃঢ় করার আহ্বান জানাচ্ছি।

মুসলিম বিশ্বকে একত্রিত হয়ে এর প্রতিবাদ করার আহ্বান করছি। সারা বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমরা একত্রিত হোক। সারাবিশ্বের নির্যাতিত মানুষ একত্রিত হোক৷ মানবতার জয় হোক। আমি ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের জন্য সবাইকে নিয়ে রাজপথে সংগ্রাম করে যাবো।