ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বাড়লে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নাগরিকদের সরাবে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ১:১১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২৩

ডেস্ক রিপোর্ট :

গাজায় চলমান সংঘাত থামানো না গেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশটির কয়েক লাখ নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
মার্কিন অস্ত্র এবং সামরিক উপদেষ্টাদের সহায়তায় ইসরায়েলি বাহিনী ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ আন্তঃসীমান্ত হামলার জন্য হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযানের জন্য ব্যাপক আকারে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এমন সিদ্ধান্তের খবর দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

কর্মকর্তারা অভ্যন্তরীণ আলোচনার বর্ণনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ইসরায়েল এবং প্রতিবেশী লেবাননে বসবাসকারী আমেরিকানরা বিশেষ উদ্বেগের বিষয়। যদিও তারা জোর দিয়ে বলেছেন, নাগরিকদের সরানোর বিষয়ে এ ধরনের পদক্ষেপ সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তবুও একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সবকিছুর জন্য একটি পরিকল্পনা না করা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় হবে।’
মার্কিন প্রশাসনের ইসরায়েলের জন্য সমর্থন সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার যুদ্ধের আশঙ্কায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হঠাৎ করে বিপুল সংখ্যক লোককে সরানোর মতো জটিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের হিসেব অনুযায়ী, হামাস যখন আক্রমণ করেছিল তখন ইসরায়েলে প্রায় ৬ লাখ মার্কিন নাগরিক ছিল এবং আরও ৮৬ হাজার লেবাননে ছিল বলে ধারণা করা হয়।

লেবাননে উদ্বেগ প্রধানত হিজবুল্লাহকে নিয়ে। তারা বর্তমানে দেশটিতে সর্বাধিক সংখ্যক সংসদীয় আসন নিয়ন্ত্রণ করে। সংগঠনটি ১৯৯২ সালে পার্লামেন্টে প্রবেশ করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ইরানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র গ্রহণ নিচ্ছে।

প্রশাসনের উদ্বেগ এই দুটি দেশের বাইরেও ছড়িয়ে গেছে। কারণ কর্মকর্তারা রাস্তায় বিক্ষোভ দেখছেন যা আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই অঞ্চলের মার্কিন কর্মী এবং নাগরিক উভয়ই উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে বলে তাদের ধারণা।

গাজায় বোমাবর্ষণের ফলে ইসরায়েলের আঞ্চলিক ক্ষোভ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। বিষয়টিকে মার্কিন কর্মকর্তারা এতদিন আরব বিশ্বের জন্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের একজন সিনিয়র ফেলো এবং ক্লিনটন প্রশাসনের প্রাক্তন কর্মকর্তা ব্রুস রিডেল বলেছেন, ‘এখন অনেকাংশে রাস্তার দায়িত্ব রয়েছে।’

সুদান, মরক্কো, বাহরাইনের সরকারে স্বাক্ষরিত চুক্তির কথা উল্লেখ করে রিডেল বলেন, ‘আমাদের গত ১০ বছর ধরে বলা হয়েছিল আরব বিশ্ব এবং মুসলিম বিশ্ব ফিলিস্তিনকে নিয়ে আর মাথা ঘামায় না। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে স্বাক্ষর করা আব্রাহাম চুক্তি তার প্রমাণ। কিন্তু না, ফিলিস্তিনের গুরুত্ব কমে যায়নি।’

ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষের প্রতিক্রিয়ায় এবং ওয়াশিংটনের ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সমর্থনের বিষয়ে আরব বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় এই সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।

সোমবার পেন্টাগনও ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সৈন্যদের ওপর হামলার আশঙ্কায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই হামলার যেসব রকেট এবং ড্রোন ব্যবহার করা হতে পারে সেগুলো ইরান থেকে আসতে পারে বলেও বিভাগটি ধারণা করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তারা এই অঞ্চলে অতিরিক্ত ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাড়াচ্ছে বলে এক কর্মকর্তারা বলেছেন।

পেন্টাগনের একজন মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার সাংবাদিকদের বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে বৃহত্তর হামলার সম্ভাবনা রয়েছেব। সিনিয়র সামরিক নেতারা মার্কিন কর্মীদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছেন।ও