বন্যা আক্তার:

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগ আয়োজিত ‘চতুর্থ অর্থনীতি গবেষণা সম্মেলন ২০২৫’ ঢাকা আফতাবনগরের ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ২৫ ও ২৬ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হাইব্রিড ফরম্যাটে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থনীতি, সামাজিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রমবাজার এবং জ্বালানি অর্থনীতি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার উপস্থাপন এবং বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনের উদ্বোধনীপর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তিনি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য দূরদর্শী নেতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং ব্যবসায় নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আগামী দশ বছরে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। তিনি তার প্রবন্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার ষাটের দশকের দারিদ্র্য থেকে উন্নতির গল্প শেয়ার করেন এবং বাংলাদেশের জন্য সে অভিজ্ঞতা থেকে শেখার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।আরেক অতিথি বক্তা হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. মনজুর হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, সামাজিক খাতে বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ‘এসব উদ্যোগ বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী অর্থনীতির দিকে পরিচালিত করবে।’

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ভূমি সংস্কার এবং শিক্ষায় আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।’ তিনি দেশের জনসংখ্যা এবং ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে গুণগত বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামস রহমান এবং অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. মুনতাসির চৌধুরী। তারা সম্মেলনের গুরুত্ব এবং একাডেমিক পরিবেশের প্রতি অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ প্রদানে তাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

সম্মেলনে মোট ২০০ জন গবেষক অংশগ্রহণ করেন এবং ১৯টি উচ্চমানের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এই প্রবন্ধগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রমবাজার, লিঙ্গ সমতা, স্বাস্থ্য অর্থনীতি এবং জ্বালানি অর্থনীতির মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে গবেষকরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং সবার অংশগ্রহণে বৈচিত্র্যপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সম্মেলনটি সাফল্যমণ্ডিত হয়।

এই সম্মেলনটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও উন্নত চিন্তা-ভাবনা এবং কার্যকর নীতিমালা গঠনে সাহায্য করবে।