ঈদের আগে যানবাহন চলবে বহুল প্রতীক্ষিত কোটাপাড়া ব্রিজে

প্রকাশিত: ১২:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২৫

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

 

রোজার ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের কথা মাথায় রেখে শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কের কাজ নানান জটিলতা পেরিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। তবে অধিগ্রহণ সমস্যার কারণে অধিকাংশ স্থানে এখনো কোন কাজই শুরু হয়নি। মহাসড়কের প্রকল্পের আওতায় দু’টি ব্রিজ রয়েছে যা বর্তমানে নির্মাণাধীন। এ দু’টি ব্রিজের মধ্যে সদর উপজেলার কীর্তিনাশা নদীর উপর নির্মাণাধীন কোটাপাড়া ব্রিজটি যোগাযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আসছে রোজার ঈদের আগেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলা শহরের ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার রাস্তা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়ক দিয়েই ঢাকামুখী যানবাহনগুলো চলাচল করছে। ১৯৯১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সদর উপজেলার কীর্তিনাশা নদীতে ১১০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থের কোটাপাড়া সেতু ও জাজিরা উপজেলার কাজির হাট বন্দর এলাকায় মরা কীর্তিনাশা নদীর ওপর ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ মিটার প্রস্থের কাজীরহাট সেতু নির্মাণ করে। দীর্ঘ ৩১ বছরে সেতু দুটির অবস্থা নাজুক হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সেতুর মেঝের প্লাস্টার ও রেলিং থেকে রড বেরিয়ে গেছে। প্রেমতলা সেতুতে যানবাহন উঠলে মনে হয় যেন দুলতে থাকে। তখন যাত্রী ও চালকরা ভয়ে আঁতকে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে শরীয়তপুর সওজ বিভাগ ভারী যানবাহন নিয়ে সেতুতে না ওঠার আহ্বান জানিয়ে দুই প্রান্তে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু সংযোগ সড়কটি টু-লেনে উন্নীত করতে ২০২০ সালে ১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে। প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুর জেলা শহরের কোটাপাড়ার ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের সেতু এবং জাজিরা উপজেলার কাজীরহাটে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয় শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই দুটি সেতু নির্মাণ করার জন্য জামিল ইকবাল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ায় কথা ছিলো ২০২২ সালের জুনে। তবে নানা জটিলতায় সেতুর কাজ শেষ করেও চালু করা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্যহয়ে পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যাতায়াত করছে সব ধরনের ভারী, হালকা যানবাহনসহ স্থানীয়রা। আর সেতুটিতে গাড়ির চাপ কমিয়ে রাখতে নিযুক্ত রাখা হয়েছে গ্রাম পুলিশও। আর সেতুটির কারণে মাঝেমধ্যেই তৈরি হয় যানবাহনের তীব্র যানজট। শরীয়তপুরের সচেতন মহলের দাবী ছিল এবার ঈদের আগেই যেন কীর্তিনাশা নদীর উপর নির্মিত কোটাপাড়া ব্রিজটি যেন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কের কাজ ধারাবাহিক ভাবে চলমান রয়েছে। ঈদ যাত্রাকে সামনে রেখে আমরা মহাসড়কের কিছু মাইনর সংস্কার ও বিশেষ করে কোটাপাড়া সেতু যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, আশা করি ঈদের আগেই ব্রিজটিতে যানচলাচল করতে পারবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার কিংসুক মন্ডল বলেন, প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে নির্দেশনা রয়েছে ঈদের আগেই যেন কোটাপাড়া ব্রিজের এপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ করে যানচলাচলের উপযোগী করি, আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি ঈদের আগেই ব্রিজের উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, মূল সেতুর স্ট্রাকচারের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। বিভিন্ন কারণে সংযোগ সড়কের কাজের কিছু সমস্যা ছিলো সেগুলো সমাধান হয়ে বর্তমানে কাজ চলমান রয়েছে। আমরা ঠিকাদারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলেছি। আশা করছি ঈদের আগে নতুন সেতু দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।