ঈশ্বরদীতে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া- শীতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, গরমে দাবদাহ
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জেলা প্রতিনিধি,পাবনাঃ
প্রতি বছরই বাড়ছে ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। শুধু গরমেই নয়, শীতকালেও এখানকার আবহাওয়া থাকে চরম ভাবাপন্ন। সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত হয়ে ওঠে জীবন।
গত ৩০ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে এ যাবত্কালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। তীব্র তাপপ্রবাহের পাশাপাশি শীত মৌসুমে ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ডও রয়েছে। ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। স্থানীয়দের প্রশ্ন কেন এমন হয়?
তাপমাত্রার এমন তারতম্যের বেশ কয়েকটি কারণের মধ্যে বিশেষ করে ভৌগোলিক কারণে শীতের সময় বেশি শীত ও গরমের সময় বেশি গরম অনুভূত হয় বলে আবহাওয়াবিদরা মনে করেন। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গরমে ঈশ্বরদীর তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং শীতে শৈত্যপ্রবাহে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার জন্য ভৌগোলিক অবস্থানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের মাঝ বরাবর কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। কর্কটক্রান্তি রেখার নিচে ঈশ্বরদীর অবস্থান। তাই গরমের সময় প্রচণ্ড দাবদাহ আর শীতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন হয় রেকর্ড হয় এখানে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, ভৌগোলিক কারণে মূলত ঈশ্বরদীতে গরমে তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায় এবং শীতে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যায়। ঈশ্বরদীর অবস্থান অনেকটাই কর্কটক্রান্তি রেখার ঠিক নিচে। সেজন্য সূর্যের কিরণ এখানে প্রচণ্ড তাপ ছড়ায়। এ ছাড়াও ঈশ্বরদীতে গাছপালা কমে যাওয়ায় উষ্ণতা বাড়ছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াও প্রধানএকটি কারণ। পদ্মা নদী পলি জমে শুকিয়ে পড়ার পাশাপাশি জলাভূমিগুলো ভরাট হয়েছে। জলাভূমি বেশি থাকলে শীতের সময় তা শীত ধারণ করে ঠান্ডা কমিয়ে দিতে পারে। আর গরমের সময় জলাভূমির স্বল্পতার জন্য আর্দ্রতা ধরে রাখা যায় না। তাই বেশি গরম অনুভূত হয়।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, গত ২০ দিন ধরে ঈশ্বরদীতে তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। এর মধ্যে ১৩ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজমান ছিল। ১৭ এপ্রিলের পর থেকে ৩ মে পর্যন্ত তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজমান রয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল ঈশ্বরদীর ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, এখানে কোনো বনভূমি নেই। সরকারিভাবে সামাজিক বনায়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।এ বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, এখানে সরকারি বনভূমি নেই। তবে, সরকারিভাবে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের আওতায় সড়ক-মহাসড়ক ও রেললাইনের ঢালে বৃক্ষ রোপণের পাশাপাশি গ্রামীণ সড়কের পাশে বৃক্ষরোপণ করা হয়।