ঈশ্বরদী চালের মোকামে ভরপুর জোগান, তবু বেড়েছে দাম

প্রকাশিত: ১:০৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৫

পাবনা প্রতিনিধি:

 

ঈশ্বরদী মোকামে ভরপুর জোগান থাকলেও দফায় দফায় বেড়ে ক্রমেই অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে ঈশ্বরদী মোকামে চালের দাম। মাসের ব্যবধানে সরু চালের পাশাপাশি মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। আর চিকন চালে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বাজারে ৬০ টাকার নীচে মোটা চাল মিলছে না। আর সরু পিওর বাসমতির দাম ১০০ টাকায় ঠেকেছে। মিলার-পাইকার-খুচরা সকল স্তরেই হাত বদলে দাম বেড়েছে।

এর আগে মাঝেমধ্যে চালের দাম দুই-এক টাকা কমলেও তা এক বা দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় না। তবে দাম যত টাকা কমে, তার চেয়ে বাড়ছে বেশি। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে ধানের সংকটের জন্য দাম কিছুটা বাড়লেও এত অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির নজির নেই, এমন অভিমত খুচরা বিক্রেতাদের।

ধানের সংকটে এমন দাম বাড়ছে অভিমত পাইকারি ব্যবসায়ী ও হাসকিং মিল মালিকদের। তারা অভিযোগ করেন, মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে পুরো মজুদ গুটিকয়েক কোম্পানির হাতে। তাদের কারসাজিতেই বাজার অস্থির হয়েছে।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বাজার ঘুরে জানা যায়, এরিমধ্যে বেড়েছে মোটা ও মাঝারি আকারের চালের দর। ৬০ টাকা কেজির নীচে মিলছে না মোটা চাল। দেশীয় চালের পাশাপাশি রয়েছে ভারতীয় চালের সরবরাহ। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আমদানিকৃত গুটিস্বর্ণা বা মোটা চাল এবং হাওর অঞ্চলের নতুন ৮৮ জাত যা ২৮ জাত বলে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সরু চালের। ৭৫-৮০ টাকার নিচে এখন সরু চাল মিলছে না। মানভেদে এ ধরনের চালের কেজি কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। এক-দেড় মাস আগেও এ ধরনের চালের কেজি ছিল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। তবে, বাজারে সরবরাহে কোনও সংকট নেই বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাজারে পুরোদমে আসতে শুরু করবে নতুন মৌসুমের চাল। বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী উত্তম বরাসিয়া বলেন, মৌসুমের শেষ দিকে দেশীয় চালের দাম বাড়ছে। কর্পোরেট সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ বাজারে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে বলে তিনি দাবি করেন। বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে এলে দাম কমবে বলে তিনি মনে করছেন।

খুচরা ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন বলেন, বাজারে আসল মিনিকেট নাই বললেই চলে। যেগুলো আছে ৮৫-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি চাল মান ভেদে ৯০-১০০ টাকা কেজি। নাজিরশাইল ৮০-৮৫ টাকা এবং কাটারি বা টুম্পাকাটারির কেজি ৭৫-৮০ টাকা।

জয়নগর মোকামের সম্পদ ট্রেডার্সের হাসকিং মিল মালিক মঞ্জুরুল আলম জানান, বেশিরভাগ হাসকিং মিল এখন বন্ধ। নতুন ধানের জন্য অপেক্ষা। আগে চাতালনির্ভর চালের সিন্ডিকেট ছিল। এখন সেটি নেই। এখন কর্পোরেট হাউজগুলো চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। খুচরা বাজারে সরু চালের দাম সর্বোচ্চ ৯৫ টাকা। কর্পোরেট হাউজগুলোর এসব চাল ১০ কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা। অর্থাৎ, এক কেজিতে ১০ টাকা বেশি। অনেকে এসব চাল খাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, বাজারে চালের দাম গত মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। প্রতি বস্তায় ৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। সামনে বোরো মৌসুমে নতুন চাল এলে দাম কমতে পারে বলে জানান তিনি।