নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকাগামী উড়োজাহাজ থেকে ৮ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণবার জব্দের ঘটনার সাত দিন পার হলেও মামলা হয়নি। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত মামলা না হওয়ায় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে জড়িতরা। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ স্বর্ণ চোরাচালান চক্র যাত্রীবেশে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজে কোটি কোটি টাকার স্বর্ণবার বহন করে সুকৌশলে পার পেয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, মাঝেমধ্যে বিমানবন্দর কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা সার্কেল দু-তিনটি স্বর্ণবারের চালান আটকালেও দ্রুত কমিশন পাওয়ার লোভে পাচার চক্রের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হচ্ছে না। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গত ২৭ অক্টোবর বিমানবন্দরে ব্যাংকক থেকে ছেড়ে ইউএস বাংলার ফ্লাইট তল্লাশি করে ১৪-এ এবং ১৫-এ সিটের নিচ থেকে পরিত্যক্ত হিসেবে দুটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। পরে এগুলো থেকে জব্দ করা হয় ৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মূল্যের ৬০টি স্বর্ণবার, যার ওজন ৬ কেজি ৯৬ গ্রাম।
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মুসফিকুর সমকালকে জানান, পাচারের উদ্দেশ্যে ইউএস-বাংলা উড়োজাহাজের সিটের নিচে বহন করা ওই স্বর্ণবারের সঙ্গে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত আছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিটের নিচ থেকে এগুলো জব্দ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে এয়ারলাইন্সের কর্মী জড়িত। তবে এ ঘটনায় পাচার চক্রের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা বা জিডি করা হয়নি। চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত আছে।
স্বর্ণ উদ্ধারের কমিশন বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, স্বর্ণ উদ্ধারে এক দিনের বেতনের সমান কমিশন পান সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। দ্রুত কমিশন পাওয়ার লোভে পাচারচক্রের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয় না, বিষয়টি আদৌ ঠিক না।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ওসি মো. এরশাদ আহমেদ জানান, বিমানবন্দর শুল্ক গোয়েন্দা সার্কেল ইউএস বাংলার ফ্লাইট থেকে প্রায় আট কোটি টাকার স্বর্ণবার উদ্ধারের খবর তিনি শুনেছেন। এখনও শুল্ক গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে থানায় মামলা হয়নি। এ কারণে পুলিশও তদন্ত করতে পারছে না। পুলিশ জানায়, এতে স্বর্ণ পাচারে একদিকে যেমন উৎসাহিত হচ্ছে স্বর্ণ চোরাকারবারি চক্র, অন্যদিকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।