জেলা প্রতিনিধি নাটোর
নাটোরের গুরুদাসপুরে কিস্তি দিতে না পারায় কুলসুম বেগম (২৮) নামে এক নারী গ্রাহকের মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে আশা এনজিওর পাঁচ কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পমপাথুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, পমপাথুরিয়া গ্রামের মো. সোহেলের স্ত্রী কুলসুম বেগম (২৮), সোহেল হোসেন (৩২) ও তার ছোট ভাই শান্ত হোসেন (২২)। আহতরা বর্তমানে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তি কুলসুম বেগম বলেন, অভাব অনটনের সংসার আমাদের। এ কারণে আশা এনজিওর মৌখাড়া শাখা থেকে আমার স্বামী সোহেলের নামে ৮৬ হাজার ও শাশুড়ি আরজিনা বেগমের নামে ৪৫ হাজার টাকা সাপ্তাহিক কিস্তি হিসেবে ঋণ নিয়েছিলাম।প্রায় ১০ বছর যাবৎ এই সমিতি থেকে আমরা ঋণ নিয়ে আবার নিয়মিত পরিশোধও করেছি। কিন্তু চলমান কিস্তির দুই সপ্তাহের টাকা বকেয়া পড়ে ৭ হাজার টাকা। ছেলের অসুস্থতা ও আর্থিক সমস্যার কারণে এই দুই সপ্তাহ কিস্তি দিতে পারিনি।
তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আশা এনজিও’র সিনিয়র সহকারী ম্যানেজরা মাসুদ রানা, সিনিয়র লোন অফিসার মোশারফ হোসেন, লোন অফিসার সাইদুল ইসলাম, মিলন নন্দী ও চাম্পা খাতুন আমাদের বাড়িতে কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য আসেন। টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে এনজিও কর্মীদের আমি অনুরোধ করে আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলি। কিন্তু তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের গাল মন্দ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে এনজিওকর্মীদের আমি বলেই ফেলি যে, আমাদের মারপিট করলেও এখন টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। এ কথা বলার পরই বাড়ির উঠানে থাকা আমার সেলাই মেশিনের টেবিল থেকে কেঁচি নিয়ে প্রথমে আমার মাথায় আঘাত করে তারা। এ সময় আমার স্বামী ও দেবর এগিয়ে এলে তাদেরকেও গালমন্দ করে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে আশা এনজিও’র মৌখাড়া শাখার সিনিয়র সহকারী ম্যানেজার মাসুদ রানা বলেন, এনজিওর কার্যক্রম অনুযায়ী গ্রাহকের বাড়িতে আমরা টাকা আদায় করতে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আক্রমণ করে। নিজেদের বাঁচানোর জন্য দুই পক্ষের মধ্যেই ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ওই নারীর হাতে থাকা কেঁচি লেগে তার মাথা কেটে যায়। আমরাও আহত হয়েছি।গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় গ্রাহক পক্ষের ২-৩ জন এবং এনজিওর এক কর্মী আহত হয়েছেন। দুই পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।