এসএম দেলোয়ার হোসেন:
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় একের পর এক প্রাণহানিতে মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। কোনো মতেই থামছে না অনাকাঙ্খিত এ দুর্ঘটনা। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতার মধ্যেও প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বর মাসে সারাদেশে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৭৫ জন।
পৃথক এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬০৫ জন। নভেম্বরে সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মোট ৬০৩টি দুর্ঘটনায় ৫০৩ জন নিহত এবং ৬৩০ জন আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বরে সারাদেশে ৫৬৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত, ৬০৫ জন আহত হয়েছেন।
একই সময়ে রেলপথে ৩১টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত এবং একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ সময়ে ১৪৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৩ জন নিহত ও ৮৫ জন আহত হয়েছেন। নভেম্বরে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৫ জন নিহত ও ১৩৮ জন আহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ২৬ জন আহত হয়েছেন।
সড়কে দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৩৩ জন চালক, ৫৪ জন পথচারী, ২০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৭ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন শিক্ষক, ৬৪ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ১ জন আইনজীবী, ২ জন প্রকোশলী, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১২ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন চিকিৎসক, ২ জন সাংবাদিক, ১ জন আইনজীবী, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন প্রকোশলী, ১০৬ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৪৫ জন পথচারী, ৫১ জন নারী, ৩২ জন শিশু, ৩৬ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩ জন শিক্ষক ও ৭ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।
নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮২৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২০ দশমিক ৭৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৩৪ দশমিক ৬২ শতাংশ বাস, ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বলেও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।