
নওগাঁ প্রতিনিধি:
দেশে যখন বারী জাতের সরিষা চাষে ব্যস্ত ছিল চাষিরা। ঠিক তখনই ফলন বেশি পাওয়ার আশায় প্রথমবারের মতো ২ একর জমিতে ভারতীয় পিয়ার ১৮ বা গুচ্ছ সরিষা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা আবু জাফর। নতুন এ জাতের সরিষা ফসলটি চাষের মধ্য দিয়ে উত্তরের জেলা নওগাঁর নিয়ামতপুরে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি। অনেকেই গুচ্ছ সরিষার ফসল ক্ষেত দেখে আগামীতে চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিয়ামতপুরে প্রথমবারের মতো গুচ্ছ সরিষা চাষ শুরু করেন আবু জাফর। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া এলাকার আলহাজ্ব ছাদরুল আমীনের ছেলে। ভারতের আসাম রাজ্যে থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। এরপর প্রায় ২ একর জমিতে গুচ্ছ সরিষা চাষবাদ শুরু করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিয়ামতপুর বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে চেয়ারম্যান মোড়ের পাশ্বে গেলে দেখা মেলে গুচ্ছ সরিষার ক্ষেত। অনেক চাষিরা ক্ষেতে এসে গুচ্ছ সরিষা দেখে এ জাতের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এ জাতের সরিষার গাছের উচ্চতা ৫-৬ ফিট থেকে থাকে। একটি সরিষা গাছ থেকে আধা কেজি থেকে পোনে এক কেজি পর্যন্ত সরিষা পাওয়া যায়।
কৃষি উদ্যোক্তা আবু জাফর বলেন, ইউটিউব দেখে গুচ্ছ সরিষা চাষপদ্ধতি শিখি। এরপর ভারত থেকে সরিষা বীজ সংগ্রহ করি। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে জমি চাষাবাদ শেষ করে প্রথমবারের মতো ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করি। দেশি জাতের সরিষার চেয়ে এ জাতের সরিষা বীজ বপনের পদ্ধতি একটু আলাদা। এটি একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব হয় ৩ থেকে সাড়ে তিন মিটার পর্যন্ত একটি গাছের অনেকগুলো শাখা প্রশাখা হয়।
তিনি আরও বলেন, বীজ বপনের পর থেকে ১১০-১২০ দিন পর ফসল ঘরে তোলা যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ১২-১৫ মণ গুচ্ছ সরিষা উত্পাদন সম্ভব। দেশি সরিষার চেয়ে এ জাতের সরিষার তেল বেশি হয়। স্বল্পমেয়াদি এই ফসল কম খরচে অধিক লাভজনক।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বরেন্দ্র ভূমিতে নতুন পিয়ার ১৮ বা গুচ্ছ সরিষা প্রথমবারের মত চাষাবাদ হয়েছে। সরিষা স্বল্পমেয়াদী ফসল। দেশি জাতের চেয়ে এ জাতের সরিষা চাষাবাদের পদ্ধতি একটু আলাদা। তবে বিঘা প্রতি দেশি জাতের তুলনায় দ্বিগুণ ফলন পাওয়া সম্ভব।
তিনি আরোও বলেন, একটি গাছ থেকে আধা কেজি হতে পোনে এক কেজি সরিষা পাওয়া যাবে। আগামীতে আমরা চাষিদের এ জাতের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।