এক লাইনে মুখোমুখি দুই ট্রেন, অল্পের জন্য রক্ষা

প্রকাশিত: ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অল্পের জন্য ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। সংকেতের ভুলে গত শুক্রবার ট্রেন দুটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া এলাকায় একই লাইনে চলে। লোকো মাস্টারদের (চালক) দক্ষতায় শেষ সময়ে ভুল ধরা পড়ে। এতে রক্ষা পান হাজারো যাত্রী এবং নতুন কেনা বিরতিহীন ট্রেন দুটি। এ ঘটনায় চকরিয়া স্টেশন মাস্টার আজিম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার রেলওয়ের চট্টগ্রামের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, স্টেশন মাস্টাররা ভুল ধরতে পেরে শেষ সময়ে ট্রেন থামান। এতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।রেল সূত্র এবং ট্রেন দুটির লাইন ক্লিয়ারেন্স স্লিপ থেকে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে কক্সবাজার এক্সপ্রেস। ৩০০১ নম্বর ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) ২২ বগির ট্রেনটিকে নিয়ে যাচ্ছিল। চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে লোহাগাড়া স্টেশনে যাওয়ার জন্য ট্রেনটিকে অনুমতি দেওয়া হয় দুপুর ১টা ২২ মিনিটে। চট্টগ্রাম থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে যাত্রা করে আরেক বিরতিহীন ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে বগি ছিল ২০টি। লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে হারবাং রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়ার জন্য ট্রেনটিকে অনুমতি দেওয়া হয় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে। লোহাগাড়ায় ট্রেন দুটির ক্রসিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পর্যটক এক্সপ্রেসকে হারবাং যাওয়ার অনুমতি দেওয়ায় ট্রেন দুটি একই লাইনে চলে আসে।

লোহাগাড়া ও চকরিয়া স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে হারবাং স্টেশন। লাইন ক্লিয়ার পেয়ে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ১টা ৩০ মিনিটে চকরিয়া স্টেশন ছেড়ে আসে। তখন এই ট্রেনের চালকের সন্দেহ হলে যোগাযোগ করেন পর্যটক এক্সপ্রেসের চালকের সঙ্গে। ওই ট্রেনও তখন লোহাগাড়া স্টেশন ছেড়ে এসেছে। এতে জানতে পারেন, দু’জন একই লাইনে ট্রেন চালাচ্ছেন। ট্রেন চললে মুখোমুখি সংঘর্ষ হবে। তখন চালকরা চট্টগ্রাম বিভাগীয় ট্রেন কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে জানতে চান, ক্রসিং কোথায় হবে। এতে ভুল ধরা পড়ে। সাইফুল ইসলাম জানান, তখন ট্রেন কক্সবাজার এক্সপ্রেসকে হারবাংয়ের আউটারে থামানো হয়।

লোকোমাস্টাররা জানান, দুর্ঘটনা হলে চালকদের দায়ী করা হতো। অথচ ভুল ছিল কন্ট্রোল রুম ও স্টেশন মাস্টারের। সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি দুর্ঘটনায় শুধু চালকদের দায়ী করা হয়েছে।চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ গত নভেম্বরে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লাইনটিতে এখনও সিগন্যাল পোস্ট, কিলোমিটার পোস্ট নেই। কোন স্টেশন খোলা, কোন স্টেশনে ক্রসিং হবে, তা ট্রেন পরিচালনায় দায়িত্বে থাকাদের জানানো হয় না। তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থা নেই এই রেলপথের স্টেশনগুলোতে।