এখনও এদিক-সেদিক তাকিয়ে শুধু মাকে খোঁজে ছয় মাসের আরফান

প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪

সাইফুল ইসলাম:

ট্রেনের আগুনে পুড়ে মারা গেছেন এলিনা ইয়াসমিন। রেখে গেছেন ৬ মাসের ছোট্ট আরফানকে। এখনও সারাদিন এদিক-সেদিক তাকিয়ে মাকে খোঁজে ছোট্ট এই শিশুটি। পরিবারের স্বজনরা জানায়, হৃৎপিন্ডে ফুটোসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত আরফান। ওর চিৎিকসায় প্রয়োজন আর্থিক সহযোগিতা। যে ছেলেকে একদম চোখের আড়াল করতো না এলিনা। সেই ছেলে থেকে আজ তিনি অনেক দূরে। আর কখনোই আদর করে বুকে টেনে তুলবে না এলিনা। দূর থেকে কি দেখে ওকে? কাঁদে কি মায়ের মন? লাল চাদরের বিছানায় শুয়ে ছোট্ট আরফান। এই হাসে এই কাঁদে। মাঝে মাঝে শূন্যে হাত বাড়িয়ে দেয়। ভাবে, এই বুঝি পেলো মায়ের স্পর্শ, মায়ের গায়ের গন্ধ। কিন্তু না। মধুর হাসি হেসে আসে না তার মা। ও জানেনা, মা এলিনা আজ দূর আকাশের তারা। আর কখনোই ফিরবে না তার মাঝে।
আরফানের বাবা সাজ্জাদ হোসেন চপল কান্নাজড়িত কণ্ঠে সবুজ বাংলাকে বলেন, হৃৎপিন্ডে ফুটোসহ বেশকিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয় আরফান। ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করাতে কাগজপত্র তৈরি করছিল ওরা। সব পুড়ে যায় আগুনে। ট্রেনে লাগা আগুনে সেদিন পুড়ে মারা যায় আমার স্ত্রী (আরফানের মা) এলিনা। পুড়ে যায় চিকিৎসার সব কাগজপত্র। এখন ছেলের চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
স্বজনরা জানান, অনেক কষ্ট করে ভারতে যাওয়ার কাগজ তৈরি করছিল ওরা। এরমধ্যে হাইকমিশনে দাঁড়ানোর কথাও ছিল। এখন অনিশ্চয়তায় পরেছে পরিবারটি। স্বল্প বেতনে চাকরি করা আরফানের বাবার সামর্থ্য নেই চিকিৎসা করানোর। ট্রেন দুর্ঘটনায় সেদিন এলিনার সাথে ছিলেন মামাতো বোন ডেইজী আকতার, তার স্বামী ইকবালসহ দুই সন্তান।
ডেইজী জানান, ছেলের চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত ছিল এলিনা। সেদিন ট্রেনে ওই কাগজ আনতেই পুড়ে মারা যায় সে। রাজনীতির প্রতিহিংসার আগুন সন্ত্রাসে এলিনা চলে গেছে। রেখে গেছে তাঁর ছোট্ট অসুস্থ আরফানকে। ওকে সুস্থ করতে এগিয়ে কি আসবেন না সহৃদয়বান মানুষেরা? প্রশ্ন স্বজনদের।